জাবি ভর্তি পরীক্ষায় শ্রুতিলেখনে 'প্রক্সি', জালিয়াতসহ আটক ৭

প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:৪৮ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শ্রুতিলেখনের মাধ্যমে প্রক্সি দেওয়ার অভিযোগে জালিয়াত চক্রের দুই সদস্য ও পাঁচজন ভর্তিচ্ছুকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদ ও বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটভুক্ত ভুক্ত 'সি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটে।

জালিয়াত চক্রের সদস্যরা হলেন- সাগর হোসেন রোহান ও মাহমুদুল হাসান শাওন। তাদের মধ্যে শাওন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের (৫০তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী এবং সাগর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী।

এছাড়া জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা হলেন- দেলোয়ার হোসেন, রাজু আহমেদ, মো. টুটুল হাসান, মো. মেহেদী হাসান ও আওয়াল হোসেন আরাফাত। আটক সকল ভর্তিচ্ছু ও জালিয়াত চক্রের সদস্য মাহমুদুল হাসান শাওন দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতার শিকার।

জানা যায়, জালিয়াত চক্রের সদস্য সাগর হোসেন রোহানকে আশুলিয়ার নির্বাহী হাকিম মো. আশরাফুর রহমানের ভ্রাম্যমাণ আদালত এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২০০ টাকা জরিমানা করেছে। এছাড়া আটক ভর্তিচ্ছুদের সকল পরীক্ষা বাতিল করা হলেও 'মানবিক' কারণে বিচার করেনি আদালত। একইভাবে  শাওনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শৃঙ্খলা অধ্যাদেশে বিচারের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাকেও 'মানবিক' কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ না করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নিরাপত্তা শাখা ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দৃষ্টিশক্তিহীন একজন ভর্তিচ্ছুর জন্য শ্রুতিলেখক হিসেবে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ১৩০ নম্বর গ্যালারি কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন সাগর। শ্রুতিলেখক হিসেবে সর্বোচ্চ দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নেওয়ার নিয়ম থাকায় সাগরের শারীরিক গঠন ও মুখাবয়ব দেখে সন্দেহ হয় দায়িত্বরত পরিদর্শকের। তার প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের প্রথমে সাগর নিজেকে স্কুল শিক্ষার্থী দাবি করলেও পরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী হিসেবে স্বীকার করেন। পাশাপাশি এর সাথে সংশ্লিষ্ট হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করেন। তখন বিষয়টি প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা শাখাকে অবহিত করার পর অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে বাকিদের নাম ও বের হয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে তারাও অসদুপায় অবলম্বনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, 'পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত পরিদর্শকের মাধ্যমে ঘটনা জানতে পেরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে সকলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও প্রমাণ মিলেছে।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে শ্রুতিলেখক জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অভিযোগ পেয়েছি, তাদেরকে নিয়মানুযায়ী শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। যারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে তাদেরকে খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী এ ঘটনায় জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবো।'

এছাড়া এদিন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত এক স্কাউট সদস্যকে আঘাতের ঘটনায় সাজিদ হাসান নামে এক ভর্তিচ্ছুর 'সি' ইউনিটের পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

আমার বার্তা/জেএইচ