প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শুধু বৈষম্যবিরোধীদের সাক্ষাৎ শিষ্টাচার বহির্ভূত
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৪১ | অনলাইন সংস্করণ
জবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য একটি সংগঠন থেকে প্রতিনিধি নেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সব ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি দেখা করতে পারবে। একটা মাত্র সংগঠন সব শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি করতে পারে না। সব সংগঠনকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আয়োজিত এক মানববন্ধনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন।
নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা অবশ্যই দেখা করতে পারে কিন্তু কোনো প্রেস নোটের মাধ্যমে তা হবে না। আমরা ক্রিয়াশীল ছাত্রসমাজের ২৮টি সংগঠনকে আমন্ত্রণ দিয়েছিলাম সভার জন্য। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দাওয়াত দিইনি কারণ তারা তাদের নিজেদের রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন মনে করে না। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যারা দেখা করেছেন তা শিষ্টাচার বহির্ভূত বলে আমরা মনে করি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির শিবিরকে ইঙ্গিত করে বলেন, আরেকটি সংগঠনকে দাওয়াত দিইনি বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এই ছাত্র সংগঠনটি অতীতে গোপন আঁতাতের মাধ্যমে রাজনীতি করেছে। খুনি সংগঠন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর তারা এবার প্রকাশ্যে এসে রাজনীতি করছে। তাই আমরা সব সংগঠনের সঙ্গে তাদের আমন্ত্রণ জানাইনি।
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাছির আরও বলেন, দুনিয়া কাঁপানো ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের ১০০-এর বেশি নেতা-কর্মী নিহত হয়েছে। তা ছাড়া সারা দেশে অন্য কোনো সংগঠনের এত নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে কেও দেখাতে পারেনি। জাতীয়তাবাদ ছাত্রদলের প্রথম শহীদ ওয়াসিমকে আমরা ভুলে যায়নি। ৫০০০-এর বেশি নেতা-কর্মী সেসময় গ্রেপ্তার হয়েছিল। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বিশ্বাস করে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্ব যে আন্দোলন গত ৫ আগস্ট তার প্রাথমিক ফলাফল পেয়েছে। ৫ আগস্টের পূর্বে সব থেকে নির্যাতিত সংগঠন ছিল ছাত্রদল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন নেতা-কর্মী এখন পর্যন্ত গুম রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভবিষ্যতে ছাত্রদলের রাজনীতি পরিচালিত হবে বলেও জানান তিনি।
এ সময় নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমরা দাবি জানাতে চাই খুনি ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সব নেতা-কর্মীকে আইনের আওতায় আনতে হবে দ্রুত।
মানববন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দেশে আয়না ঘর বানিয়ে আমাদের ভাই ছাত্রদলের রাসেল, রানা, আল আমিনকে আজও গুম অবস্থায় রেখেছে। প্রতিটি মায়ের আহাজারি তারা তাদের সন্তানকে ফেরত চায়। প্রতিটি ছাত্রদলের সহকর্মী তাদের ফেরত পেতে আহাজারি করছে। আমরা আমাদের গুম হওয়া সহকর্মীকে ফিরে পেতে সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করে আন্দোলন চালিয়ে যাব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেত, সিনিয়র সহসভাপতি ইব্রাহিম কবির মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হিমেল, মো. মাহমুদুল হাসান খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আরেফিনসহ শাখা ছাত্রদলের অসংখ্য নেতা-কর্মী।
আমার বার্তা/এমই