কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণবিরোধী মিছিলে এক কাতারে শিবির-ছাত্রদল
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৫, ১১:১৩ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে একযোগে আন্দোলন করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দল-মত নির্বিশেষে এক কাতারে বিক্ষোভে অংশ নেয় বাকৃবি শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল থেকে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে টিএসসি, উপাচার্যের বাসভবনের সামনের রাস্তা হয়ে কেআর মার্কেটে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীদের প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এসব অপরাধের দ্রুত বিচার দাবি করেন। তারা ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আতিকুর রহমান, সদস্য সচিব মো. শফিকুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এ এম শোয়াইব, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বাকৃবি শাখার সভাপতি ফখরুল ইসলাম, সেক্রেটারি মো. আবু নাছির মো. ত্বোহা, অফিস সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মঈন। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বাকৃবি শাখার আহ্বায়ক মো. আজিজুল হক আজিজ, ছাত্র ইউনিয়ন বাকৃবি শাখার সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সঞ্জয় রায়সহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণবিরোধী মিছিলে এক কাতারে শিবির-ছাত্রদল
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণবিরোধী মিছিলে এক কাতারে শিবির-ছাত্রদল
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে? আছিয়া! আছিয়া!’, ‘আছিয়ার কান্না আর না, আর না!’, ‘আমার বোন ধর্ষিতা কেন? বিচার চাই, বিচার চাই!’, ‘ধর্ষকদের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই!’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না!’, ‘দড়ি লাগলে দড়ি নে, ধর্ষকদের ফাঁসি দে!’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে ফাঁসি দে!’, ‘জনে জনে খবর দে, ধর্ষকের কবর দে’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশে বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান বলেন, জুলাই আন্দোলনে আমরা বুকের রক্ত ঝরিয়েছি একটি আদর্শ ও স্বপ্ন নিয়ে। কোনো ধর্ষকের আশ্রয় দেওয়ার জন্য নয়। এ দেশে এখন একটি শিশুও নিরাপদ নয়। আমরা চাই, সব শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত হোক, যাতে সবাই নিরাপদে ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে। আমরা সবাই ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
ছাত্রশিবির বাকৃবি শাখার সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের বোনেরা আর নিরাপদ নয়। আমরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছি। আমরা এমন একটি সমাজ চাই, যেখানে নারীরা নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতে পারবে। যতক্ষণ পর্যন্ত ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হবে না, ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পাবে না এবং নারীরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বাকৃবি শাখার আহ্বায়ক আজিজুল হক বলেন, ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে এ ধরনের ধর্ষণের ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ধর্ষকদের একমাত্র উপযুক্ত শাস্তি হলো ফাঁসি। যতদিন তাদের ফাঁসি কার্যকর না হবে, ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সঞ্জয় রায় বলেন, আমরা এখনো পর্যন্ত কোনো ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের খবর শুনিনি। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিদিন ধর্ষকদের আরও সাহস জোগাচ্ছে। সমাজে নারীদের পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করার ফলে ধর্ষণের মনোভাব গড়ে উঠছে। আমরা চাই, দ্রুত সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
ছাত্র ইউনিয়ন বাকৃবি শাখার সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, আমরা চাই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ। যদি তা না হয়, তবে অবশ্যই ধর্ষকের ফাঁসি কার্যকর করতে হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষকের ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।
আমার বার্তা/জেএইচ