নিখোঁজের একদিন পর হানিফ ফ্লাইওভারে মিলল গাড়িচালকের রক্তাক্ত মরদেহ

প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৩৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

রাজধানীর সবুজবাগের বাসাবো এলাকা থেকে নিখোঁজের একদিন পর যাত্রাবাড়ীর হানিফ ফ্লাইওভারের পাওয়া গেল গাড়িচালক সোহেল মিয়ার(৩৮) রক্তাক্ত মরদেহ। ঘটনার পর থেকে বাসাবো এলাকার গ্যারেজ মালিক রুবেল পলাতক রয়েছে।পুলিশের ধারণা তাকে গ্যারেজে হত্যা করে হানিফ ফ্লাইওভারে ফেলে যায় হত্যাকারীরা।

সোহেল শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার আকন কান্দি গ্রামের মৃত মোখলেসুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে পরিবারের সাথে সবুজবাগের বাসাবো কদমতলা এলাকায় ভাড়া থাকতো।

শুক্রবার (১ নভেম্বর )ভোর ছয়টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে দুপুরের দিকে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে মরদেহ পাঠিয়েছে পুলিশ।

নিহতের আত্মীয় হাবিবুর রহমান জানান, সোহেল পেশায় গাড়ি চালক ও নিজেই মালিক।গতকাল সবুজবাগের উত্তর বাসাবো ঝিলপাড় গ্যারেজের গাড়ি মেরামত করার জন্য যায়।গ্যারেজের মালিক রুবেল বলে গাড়ির কাজের জন্য কিছু পার্টস আনতে হবে।এই বলে গাড়ির পার্টস আনার জন‍্য যায় সোহেল। পরে ফোন দিলে আর সোহেল কে ফোনে পাওয়া যায় না।পরে সোহেলে স্ত্রী শারমিন গ্যারেজে গিয়ে তার স্বামীর খোঁজ করলে রুবেল বলে তাকে পার্টস আনতে দিয়েছি।তার স্ত্রী বারবার ফোন করলে তাকে ফোনে পায়না।পরে সবুজবাগ থানায় একটা জিডি করেন। পরে সুমনের লাশ ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে আমরা দেখতে পাই।তিনি জানান গ্যারেজে মালিক সুকৌশলে সোহেলকে হত্যা করেছে বলেও জানান তিনি।গ্যারেজ মালিক রুবেল পলাতক রয়েছে।

যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই)মো আমির হোসেন বলেন,হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজার লোকজন আমাদের খবর দিলে আমরা ঘটনাস্থলে যাই।পরে  ধোলাইপাড় ফ্লাইওভারের উপর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় সোহেল মিয়া নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করি।পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরো জানান,আমরা জানতে পেরেছি নিহত পেশায় প্রাইভেট কার চালক ছিলেন।  গতকালকে উত্তর বাসাবো এলাকায় একটি গ্যারেজে গাড়ি কাজের জন্য যায় তারপরে আর বাসায় ফিরে আসেনি।তার মাথার বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে  ভারী কোন বস্তু ও ধারালো অস্ত্র আঘাতের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। পরে আমরা সবুজবাগ থানার সাথে যোগাযোগ করলে জানা যায় সেখানে একটি জিডি হয়েছে পরে আমরা বিষয়টি সবুজবাগ থানা কে জানাই এবং বর্তমানে বিষয়টি তারাই তদন্ত করছে।

আজ বিকেলের দিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সবুজবাগ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)ইয়াসিন আলী বলেন, গতকাল নিহত সোহেলের স্ত্রী শারমিন তার স্বামীকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন আমাদের থানায়। পরে আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করি। সকালে জানতে পারলাম হানিফ ফ্লাইওভার থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। পরে আমাদের অফিসার এবং তার স্ত্রী ঢাকা মেডিকেলে মর্গে গিয়ে সোহেলের পরিচয় সনাক্ত করে।

তিনি আরো জানান, নিহতের স্ত্রী জানান তার স্বামী পেশায় একজন প্রাইভেটকার চালক ছিলেন। সেই প্রাইভেট কারের কাজ করার জন্য সবুজবাগের বাস ঝিলপার এলাকায় রুবেল নামে একজনের গাড়ির গ্যারেজে যায়। তার স্বামীকে মোবাইলে না পেয়ে সে ওই গ্যারেজে যায়। কিন্তু তার স্বামীর আর যোগাযোগ করতে পারেনি। এই ঘটনায় আমরা ওই গ্যারেজে গিয়ে রক্তের আলামত পাই। ধারণা করা হচ্ছে গ্যারেজ মালিক রুবেল ওইখান থেকে তাকে হত্যা করে ফ্লাইওভারে ফেলে গেছে। ঘটনার পর থেকে গ্যারেজ মালিক রুবেল পলাতক রয়েছে। রুবেলকে গ্রেপ্তার করতে পারলেই এই ঘটনার আসল রহস্য জানা যাবে বলে। এই ঘটনায় সবুজবাগ থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।


আমার বার্তা/এম রানা/জেএইচ