নারী অভিবাসীদের যৌন নিপীড়ন ও এইডস প্রতিরোধে সচেতনতা

মিরপুরে ভলান্টিয়ার প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ২১:৪৮ | অনলাইন সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক:

নারী অভিবাসীদের যৌন নিপীড়ন ও এইডসের ঝুঁকি মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজধানীর মিরপুর দারুসসালামে অবস্থিত BOMSA কার্যালয়ে এক বিশেষ ভলান্টিয়ার প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রশিক্ষনের আয়োজন করে নারী উন্নয়ন শক্তি (NUS), বাংলাদেশী অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন (BOMSA), ইয়াং উইমেন ফর ডেভেলপমেন্ট রাইটস অ্যান্ড ক্লাইমেট (YWDRC), এবং ফোরাম ফর কালচার অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (FCHD)।

প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারী উন্নয়ন শক্তির নির্বাহী পরিচালক ড. আফরোজা পারভীন। প্রশিক্ষণ সেশন পরিচালনা করেন BOMSA-র সভাপতি লিলি জাহান, নির্বাহী পরিচালক শেখ রুমানা, YWDRC-এর প্রোগ্রাম অফিসার সেলিনা খাতুন এবং FCHD-এর প্রোগ্রাম অফিসার সাবিনা সুলতানা।

প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়:

সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ নারী অভিবাসী কর্মী বিদেশে গমন করেন (সূত্র: BMET, ২০২৩)। IOM-এর এক গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় ৪২% নারী কর্মী কর্মস্থলে যৌন হয়রানির শিকার হন এবং ১৮% শারীরিক নির্যাতনের সম্মুখীন হন। এছাড়া WHO-র তথ্যমতে, দক্ষিণ ও মধ্যপ্রাচ্যে অভিবাসী নারীদের মধ্যে এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি গড়ে ২.৫ গুণ বেশি।

এই alarming তথ্যগুলোর প্রেক্ষিতে অভিবাসী নারীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়।

প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল:

১. অভিবাসী নারী ও প্রবাসী কর্মীদের যৌন নিপীড়ন ও এইডস সংক্রান্ত ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি।
২. দক্ষ ভলান্টিয়ার গড়ে তুলে নেতৃত্বের মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া।
৩. ভবিষ্যতে ভলান্টিয়ারদের মাধ্যমে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনা।
৪. সরকারের নিকট অভিবাসী নারী কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে স্পষ্ট দাবি উত্থাপন।

প্রশিক্ষণের ফলাফল:

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভলান্টিয়াররা নিজ নিজ এলাকায় সম্ভাব্য নারী অভিবাসীদের সচেতন করার প্রতিশ্রুতি দেন। তারা যৌন নিপীড়নের প্রাথমিক প্রতিরোধ কৌশল, অভিযোগ প্রক্রিয়া ও এইডস প্রতিরোধে প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করেন।
অংশগ্রহণকারীদের দাবিসমূহ:

  •     নারী অভিবাসীদের সুরক্ষা ও এইডস প্রতিরোধে আলাদা বাজেট বরাদ্দ।
  •     প্রবাস যাত্রার পূর্বে নারীদের প্রস্তুতির জন্য কার্যকর প্রশিক্ষণ ও সুরক্ষা পরিকল্পনা।
  •     নির্যাতিত অভিবাসী নারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা।
  •     স্বাস্থ্যসেবা ও আইনি সহায়তা নিশ্চিতকরণ।
  •     নারী নেতৃত্বাধীন এনজিওগুলিকে কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা।
  •     প্রবাসী কল্যাণ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে নিরাপত্তা নীতিমালা বাস্তবায়ন।
  •     সুবিচার ও পুনর্বাসনের জন্য ভুক্তভোগী অভিবাসীদের জন্য পৃথক সেল গঠন।
  • আয়োজকরা জানান, উত্থাপিত দাবিসমূহ সরকারকে লিখিত আকারে পেশ করা হবে এবং এ বিষয়ে অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

আমার বার্তা/এমই