১০ বছরেও শেষ হয়নি শিক্ষক হত্যার বিচার, মামলা প্রত্যাহারের হুমকি
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:২৮ | অনলাইন সংস্করণ
মোহাম্মদ তোফাইল, টেকনাফ (কক্সবাজার) :
দীর্ঘ ১০ বছরেও শেষ হয়নি কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের টেকনাফ ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মো. শামসুল আলম হত্যার বিচার কার্যক্রম। এই হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী দিলসাদ বেগমকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন- এমন অভিযোগ তুলেছেন কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও মামলার বাদীরা।
এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার কার্যক্রম শেষ করে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে টেকনাফ কলেজ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও পরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
কলেজ শিক্ষক মো. শামসুল আলমকে ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পশ্চিম মহেশখালীয়া পাড়ার মৃত ফজল করিমের ছেলে।
মানববন্ধন উত্তর সমাবেশে টেকনাফ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামসুল আলম বলেন, একজন শিক্ষককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ১০ বছরেও বিচার হয়নি। আসামিরা জামিনে এসে বাদীকে মামলা প্রত্যাহার করতে চাপ ও সাক্ষীদের আদালতে সাক্ষ্য প্রদানে বাধা দেয়া হচ্ছে। একজন সহকর্মী শিক্ষক হিসেবে রাষ্ট্রকে বিচার নিশ্চিত করার আবেদন জানাচ্ছি।
অধ্যাপক সিরাজুল হক সিরাজ বলেন, বাংলা বিভাগের এই সহকর্মী শিক্ষককে দিনদুপুরে কারা হামলা করেছিল এলাকার সবাই জানেন। অথচ এই মামলাটি বছরের পর বছর আটকে আছে। রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদর্শন করে আসামিরা প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।
এতে বক্তব্য দেন অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন, অধ্যাপক আব্দুল গফুর, অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম প্রাক্তন শিক্ষার্থী গিয়াস উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম ও বর্তমান শিক্ষার্থী মুজিবুর রহমান, সুখী, মোহাম্মদ শফিক প্রমুখ।
মামলার বাদী দিলসাদ বেগম জানান, জামিনে মুক্তি পাওয়া মো. হাসান ইতোমধ্যে মারা গেছেন। অন্য আসামিরা এখন মামলা প্রত্যাহার করতে হুমকি ও সাক্ষীদের নানাভাবে হয়রানি করছে।
তিনি স্বামীর হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
অধ্যাপক সন্তোষ কুমার শীল বলেন, একজন শিক্ষককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ১০ বছরেও বিচার হয়নি। আসামিদের একজন মারা গেলেও অন্যরা জামিনে রয়েছে। তারা বাদীকে মামলা প্রত্যাহার এবং সাক্ষীদের আদালতে সাক্ষ্য প্রদানে বাঁধা দিচ্ছে। একজন সহকর্মী শিক্ষক হিসেবে রাষ্ট্রকে বিচার নিশ্চিত করার আবেদন জানাচ্ছি।
অধ্যাপক সিরাজুল হক সিরাজ বলেন, বাংলা বিভাগের এই সহকর্মী শিক্ষককে দিন দুপুরে কারা হামলা করেছিল এলাকার সকলেই জানে। অথচ এই মামলাটি বছরের পর বছর আটকে আছে। রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদর্শন করে আসামি প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন, অধ্যাপক আব্দুল গফুর, অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম প্রাক্তন শিক্ষার্থী গিয়াস উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম ও বতমান শিক্ষার্থী মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ শফিক প্রমুখ।
২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর বিকালে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল কলেজ শিক্ষক মো. শামসুল আলমকে। তিনি টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পশ্চিম মহেশখালীয়াপাড়ার মৃত ফজল করিমের ছেলে।
আদালত থেকে প্রাপ্ত মামলার নথিপত্র বলছে, ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর শুক্রবার প্রকাশ্যে শামসুল আলমের ওপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে তাঁকে কক্সবাজার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর অবস্থা অবনতি হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। কিন্তু পথেই গাড়িতে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর নিহতের স্ত্রী দিলাসাদ বেগম বাদি হয়ে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে টেকনাফ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এজারভূক্ত আসামিরা হলেন,(১)আব্দুল মালেক(২)মহি উদ্দিন (৩)জালাল উদ্দিন (৪)আবুল কাশেম(৫)জাহেদ হোছাইন (৬)সাইফুল ৭)জয়নাল আবেদীন ৮)আলী আকবর ৯ আয়ুব উদ্দিন সহ সকল আসামিদের অভিযুক্ত করে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে প্রকৃত অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্তা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন টেকনাফ সরকারি কলেজ পরিবার ও বাদী এবং এলাকাবাসী।