কপি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন ডিমলার কৃষকরা
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:২৯ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ হাবিবুল হাসান হাবিব, ডিমলা (নীলফামারী) ঃ
কপি চাষের উপযোগী জমি ও পরিবেশ এবং স্বল্প সময়ে লাভজনক আবাদ হওয়ায় আগ্রহী হচ্ছেন ডিমলার কৃষকরা। কয়েক বছর ধরে উপজেলায় বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিন সুন্দর খাতা গ্রামে হাতে গোনা কয়েকজন কৃষক কপি চাষ করে আসছেন। গত বছরেও তারা কপি চাষ করে দ্বিগুন লাভ পেয়েছেন।
সে অনুযায়ী আগাম আমন ধানের উফশী ব্রি-জাতের ধান কেটে কপি চাষ করেছেন এ বছরেও। কেউ জমিতে লাগিয়েছেন ফুলকপি আবার কেউ বাঁধা কপি। বর্তমানে প্রতি কেজি কপি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে । আলু বীজের দাম বেশি ও উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ায় কৃষকরা ঝুকেছেন কপি চাষে। সরেজমিন দেখা যায়, কৃষকরা কপির পরিচর্যা করতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। অনেকে জমি চাষ করে রোপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আবার অনেকেই ইতোমধ্যে কপি রোপন করে ফেলেছেন।
উপজেলার দক্ষিন সুন্দর খাতা গ্রামের কৃষক লালন মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি দুই বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছেন। পর্যায়ক্রমে ধান কাটার পর আরো কিছু জমিতে রোপন করবে। তিনি জানান, বিঘা প্রতি (৩৩ শতাংশ) জমিতে চার হাজার কপির চারা রোপন করতে হয়। চারা থেকে জমিতে রোপনের পর প্রতিটি চারায় তার খরচ হবে ১০ টাকা, সে হিসেবে বিঘা প্রতি খরচ হবে চল্লিশ হাজার টাকা। আবাহাওয়া ভালো থাকলে এবং সঠিক বাজার মূল্য যদি পাই তাহলে আমার এক বিঘা জমির কপি বিক্রি হবে ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা।
একই গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর ইসলাম জানান, কপি চাষ লাভজনক হলেও শুরুতে দরকার হয় বড় অংকের টাকা, জৈব ও রাসায়নিক সার, পরিচর্যার জন্য দরকার হয় দক্ষ শ্রমিক তবে দক্ষ শ্রমিক কম পাওয়া যায়। পাওয়া গেলেও মজুরী বেশি।
কৃষক সোহেল ইসলাম জানান, স্বল্প সময়ে কপির আবাদটি হওয়ায় কপি বিক্রি করে নগদ অর্থ পাওয়া যায়, কপি তুলে ঐ জমিতে আলু, বাদাম বা ভুট্টা রোপন করা যায়। কপি চাষিদের মতে কপি চাষ হচ্ছে ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার মত।
ঐ এলাকায় কপি চাষ করেছেন কৃষক আলী নেওয়াজ, কৃষক শাহিনুর, কৃষক দুলাল, কৃষক হবি সহ আরো অনেক কৃষক।
নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলা একটি কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি নির্ভর এলাকা। এখানে কপি, ধান, ভুট্টা , আলু, মরিচ, পাট, গম, বাদাম সহ বিভিন্ন শাক সবজী আবাদে উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে এখানকার কৃষি পন্য।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না বলেন, বর্তমানে সবজীর চাহিদা ও বাজার মুল্য বেশি এবং স্বল্প সময়ে জমি থেকে কপি উৎপাদন করা যায় তাই কপি চাষে আগ্রহ হচ্ছেন অনেক কৃষক। আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে কৃষি বিভাগ থেকে কপি চাষে কৃষকদের কপি চাষে উদ্যোগ এবং পরামর্শ প্রদান করছেন।