খুনিদের বিচার-শাস্তির কথা জুলাই ঘোষণাপত্রে থাকতে হবে: সারজিস আলম

প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

জুলাই ঘোষণাপত্রে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিচার বাংলার মানুষ দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ভোলায় জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের জনমত তৈরিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণসংযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এর আগে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে ভোলা বাংলা স্কুল মোড়, সদর রোড, নতুন বাজার এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন। পরে সরকারি স্কুল সংলগ্ন ইলিশা ফোয়ারা মোড়ে পথসভায় বক্তব্য দেন সারজিস।

সারজিস আলম বলেন, গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণ একটি নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়া শাসনের অধীনে চরম জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তাই বাংলার মানুষের হাতে হাত রেখে বাংলার মাটি থেকে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে লড়াই করে বিদায় করছি।

তিনি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- খুনি হাসিনাসহ যাদের নির্দেশে এত মানুষকে খুন করা হয়েছে, রক্ত ঝরানো হয়েছে, তাদের বিচার এবং শাস্তির কথা স্পষ্ট করে এই ঘোষণাপত্রে থাকতে হবে। আমরা সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা একাত্মতা পোষণ করেছেন। আমাদের ৭ দফা দাবিকে যৌক্তিক বলে জানিয়েছেন।

সারজিস বলেন, আমরা আশা করি, গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আহতদের সরকারি খরচে চিকিৎসা, আওয়ামী খুনি ও তাদের দোসরদের বিচার এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব পরিষ্কারভাবে উল্লেখসহ সাত দফা যৌক্তিক দাবি নিয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র রাষ্ট্র দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, এতদিন মানুষ দেখেছে কেবল ভোটের সময় রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের কাছে আসেন। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার আমলে ভোট চাইতেও কেউ আসেনি। আমরা এর পরিবর্তন চেয়েছি।  আমরা যে বিশ্বাস ধারণ করি, ১৫ বছরের নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়া শাসনের চরম জুলুম ও নির্যাতনের অবসান করতে পেরেছি।  বাংলার মাটি থেকে স্বৈরাচার হাসিনাকে লড়াই করে বিদায় করেছি। তাই ঘোষণাপত্রে কী থাকা প্রয়োজন- তা সাধারণ মানুষকে জানাতে আমরা সারা দেশের মতো দ্বীপ জেলা ভোলায় এসেছি।

এ সময় তিনি দ্বীপ জেলা ভোলার গ্যাসের মজুত প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, যে জেলায় গ্যাসের মজুত রয়েছে, তারা কেন বাসা বাড়িতে গ্যাসের ব্যবহার করতে পারবেন না। যে জেলার অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা, বরিশাল নিতে পথে মারা যান, সেই জেলায় কেন মেডিকেল কলেজ হবে না। এমন বৈষম্য দূর করতেই আমরা আন্দোলন করেছি।

জুলাই বিপ্লবে ভোলার ৪৭ জন প্রাণ দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন সারজিস।

তিনি বলেন, এই ঘোষণাপত্রে প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলার শ্রমিক মেহনতী মানুষের আত্মত্যাগের কথা উঠে আসতে হবে। এটি যেন কয়েকজনের কথা না হয়।

শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জে সিন্ডিকেট বসিয়েছে উল্লেখ করে সারজিস বলেন, তার পরিবার প্রত্যেকটি জায়গায় সিন্ডিকেট বসিয়ে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। সেগুলোকে শেষ করে সমতার একটি বাংলাদেশ দেখতে চায় বাংলার মানুষ।

এর আগে তিনি ভোলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ জসিম উদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে সহানুভূতি জানান। এছাড়াও জসিম উদ্দিনের কবর জিয়ারত করেন তিনি।

কর্মসূচিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সমন্বয়ক এমএ সাঈদ, সহসমন্বয়ক রাসেল মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুর রহমান তুহিন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন ফয়সাল, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারসহ ভোলার সমন্বয়ক ও ছাত্র-জনতা উপস্থিত ছিলেন।


আমার বার্তা/জেএইচ