রাঙ্গাবালীতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন, সভাপতির পদত্যাগ দাবিতে আল্টিমেটাম

প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:১৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আরিফ খান ( মাল্টিমিডিয়া প্রতিনিধি) রাঙ্গাবালী :

ছবি:আমার বার্তা

ছাত্রজীবনে যিনি শিক্ষক লাঞ্ছিত করে বহিষ্কার হয়েছিলেন ,তাকেই ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি করে আনার  অভিযোগে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ আব্দুল ছাত্তার স্কুল এন্ড কলেজের এডহক কমিটি গঠন নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

এই অসন্তোষের কারণেই বুধবার ক্লাস বর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। পরে এডহক কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিনের পদত্যাগ চেয়ে মানববন্ধন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০ টায় কলেজ মাঠে এ কর্মসূচির আয়োজন করে শিক্ষার্থীরা। এসময় আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন করবেন বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বক্তৃতায় বলেন, শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকদের কাউকে না জানিয়ে গোপনে মামলাবাজ হিসেবে চিহ্নিত জসিম উদ্দিনকে এডহক কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। ছাত্রজীবনে এই জসিম উদ্দিন এই প্রতিষ্ঠানেরই এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার দায়ে বহিষ্কার হয়েছিলেন। তাই তাকে কেউ সভাপতি হিসেবে মেনে নিবে না। অনতিবিলম্বে তাকে পদত্যাগ করতে হবে।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, ওই কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিনের যোগসাজশে জসিম উদ্দিনকে এডহক কমিটির সভাপতি করার প্রতিবাদে করা কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জেরে রাঙ্গাবালী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও চরমোন্তাজ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলামসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গত ২০ জানুয়ারি গলাচিপা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। 
 
ওই মামলা হয়রানিমূলক ও সাজানো দাবি করে বুধবার দুপুরে চরমোন্তাজ স্লুইস বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে প্রায় তিন হাজার মানুষ অংশ নেন। এতে বক্তারা বলেন, গত ১১ জানুয়ারি অধ্যক্ষ রুহুল আমিনের করা গোপন কমিটি বাতিলের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে নজরুল ইসলাম অংশ নেওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়েছিলেন সভাপতি জসিম। এই জেরে  নবগঠিত কলেজ কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিনের ছোট ভাই চরমোন্তাজ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক কেএম রিয়াজকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে মর্মে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে মামলা করা হয়েছে। যে মামলার বাদী হয়েছেন সভাপতি জসিম নিজেই। তাই অনতিবিলম্বে হয়রানিমূলক এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চরমোন্তাজ আবদুল ছাত্তার স্কুল এন্ড কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিনকে ফোন করলে তিনি নিজেকে উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্শ্বান্বিত হয়ে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য প্রতিপক্ষ নজরুল মুন্সি এসব সাজানো নাটক করছে। মূলত নজরুল মুন্সির পছন্দের ব্যক্তি সভাপতি না হাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ। এছাড়া আমার ছোট ভাই রিয়াজকে মারধর করায় মামলা করা হয়েছে।’ তবে নজরুল ইসলাম মুন্সি বলেন, জসিম উদ্দিনকে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি করার প্রতিবাদ করায় তার ভাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক  রিয়াজকে মারধর করা হয়েছে। এমন নাটক সাজিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিক ফয়দা হাসিল করতেছে। এলাকাবাসী এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ করেছে।’  

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান বলেন, এবিষয়ে সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি আমি উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষকে জানাবো।