ডিমলায় তীব্র শীত উপেক্ষা করে কৃষকেরা বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত
প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৫৭ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ হাবিববুল হাসান হাবিব(মাল্টিমিডিয়া প্রতিনিধি) ডিমলা :
নীলফামারীর ডিমলায় তীব্র শীত উপক্ষো করে কৃষকেরা বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত । উপজেলার দশটি ইউনিয়ন-বালাপাড়া, ডিমলা, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, নাউতারা ইউনিয়নের কৃষকেরা বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কয়েকদিন থেকে দেখা যায়, কনকনে তীব্র শীতে উপজেলার বুড়ি তিস্তা নদীর পূর্বপাশ সংলগ্ন বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজ সুন্দর খাতা, মধ্যম সুন্দর খাতা ও দক্ষিন সুন্দর খাতা গ্রামের কৃষকেরা বোরো ধান রোপন করছেন । অনেক কৃষকের ধান রোপন শেষের দিকে। ২৫ জানুয়ারী (শনিবার) সকাল ৯ টায় সরে জমিনে দেখা যায়, উত্তরের হিমেল হাওয়া ও কনকনে শীত উপেক্ষা করে বোরো ধানের কচি চারা রোপনের জন্য শ্রমজীবি শ্রমিকরা ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করছেন, কেউবা ধানের কচি চারা উঠানো কাজে ব্যস্ত, কেউ জমিতে মই টানছেন, কেউ কোদাল দিয়ে আইল ছাটানোর কাজ করছেন আবার কেউ জমিতে ধানের চারা সারি সারি লাগানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
স্থানীয় কৃষক মফিজুল ইসলাম জানান, জমি বর্গা নিয়ে হাইব্রীড জাতের বোরো ধানের চারা রোপন করেছি। তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে এবারে বোরো ধানের চাষাবাদে খরচ বেশি। ট্রাক্টরের ভাড়া, শ্রমিকের দাম, সার, ডিজেল, কীটনাশক সহ সেচমুল্যের দাম উর্দ্ধগতি। আমাদের জমিগুলো নিচু, এক ফসল ছাড়া দুই ফসল ঘরে তুলতে পারি না তাই হাইব্রীড জাতের বোরো ধানের চারা রোপন করছি। কৃষক সোহরাব আলী জানান প্রাকৃতিক দূয্যোর্গ বন্যার পানিতে বুড়িতিস্তা নদীর পূর্বপাশ ঘেষে বালাপাড়া ইউনিয়নের সুন্দর খাতা গ্রামের কচুবাড়ীর দলায় অবস্থিত একটি বাঁধ আছে সামান্য বন্যার পানিতে বাঁধটি ভেঙ্গে যায়। বাঁধটি সম্পূর্ণ মেরামত করা জরুরী প্রয়োজন। আমাদের এলাকার নিজ সুন্দর খাতা, মধ্যম সুন্দর খাতা, দক্ষিন সুন্দর খাতা গ্রামের প্রায় হাজার হাজার বিঘা জমিতে বর্ষা মৌসুমে আমন ধান রোপন করতে পারি না। বোরো ধান কর্তনের সময় বন্যার পানি ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাই মাঘ মাসের প্রথম সপ্তাহে ইরি ধান রোপন করছি। স্থানীয় জমির মালিক জমসের আলী জানান, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে বুড়ি তিস্তা নদীটি খননের উদ্দ্যোগ গ্রহন করলে এ এলাকার কৃষকেরা যেমন উপকৃত হবে তেমনি এ এলাকার কৃষকের ফসলি জমি বাড়বে।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ মীর হাসান আল বান্না বলেন, কৃষকেরা আমাদের প্রান। উপজেলার কৃষকেরা তীব্র শীত উপক্ষো করে বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত। এবছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ১১,২৯২ (এগারো হাজার দুইশত বিরানব্বই) হেক্টর। এখন পর্যন্ত উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপন করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় ১১.৮ মেট্রিক টন বীজ কৃষকদের মাঝে বিতরন করা হয়েছে। জাতগুলো হলো-এস,এল,এইট,এইচ, ময়না, টিয়া, ব্যাবিলন সুপার, এসিআই-১ ও ২ এবং উইনল ইত্যাদি।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আব্দুল খালেক বলেন, ডিমলা উপজেলা কৃষি অফিস হইতে স্থানীয় কৃষকদের তীব্র শীতে চলতি বোরো মৌসুমে সর্বাত্মক সহযোগীতা ও পরামর্শ প্রদান করা হবে। স্থানীয় কৃষকেরা এ উপজেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে দেশের জনগনের খাদ্য চাহিদা পুরন করতে সক্ষম হবে এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।