গাজীপুরে দুই কারাগারের দুই কয়েদির মৃত্যু

প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:৫৭ | অনলাইন সংস্করণ

  গাজীপুর প্রতিনিধি:

গাজীপুরের দুটি কারাগারের দুজন কয়েদি মারা গেছেন। গতকাল সোমবার রাতে তাঁদের হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। একজনের মৃত্যু হয়েছে গাজীপুর জেলা কারাগারে ও অপরজন গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১-এ মারা যান।

গাজীপুর জেলা কারাগারে মারা যাওয়া কয়েদির নাম ওমর ফারুক (৩৩)। তিনি জেলার কাপাসিয়া উপজেলার টোকা ইউনিয়নের বীর উজ্জলী গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে। ওমর ফারুক দুই বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের পার্ট-১-এ মারা যাওয়া কয়েদির নাম দুলাল উদ্দিন (৫২)। তিনি কাপাসিয়ার কেন্দুয়াব গ্রামের মহিন উদ্দিনের ছেলে।

দুই কয়েদির মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা আক্তার।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ওমর ফারুক ২০১৯ সালে কাপাসিয়া থানার একটি মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সম্প্রতি তিনি কারাগারের ভেতরে কারা কর্মকর্তাকে মারধর করার কারণে আরও একটি মামলায় আসামি ছিলেন। অপর দিকে, দুলাল উদ্দিন কাপাসিয়া থানার একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে কাশিমপুর কারাগারে বন্দী ছিলেন।

গাজীপুর জেলা কারাগার সূত্র জানিয়েছে, গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে কারাগারের একটি সেলে কম্বল পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওমর ফারুক। বিষয়টি কারারক্ষীরা টের পেয়ে তাঁকে প্রথমে কারা অভ্যন্তরে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে তাঁকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগী মারা গেছেন বলে জানান। কর্তব্য চিকিৎসক তাঁর মৃত্যুর সনদে ‘ব্রড ডেথ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের একটি মামলায় ওমর ফারুককে দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। তিনি গত ২৫ জানুয়ারি থেকে কারাগারে ছিলেন। ২৯ জানুয়ারি কারাগারের ভেতরে কেস টেবিলে সার্জেন্ট ইনস্ট্রাক্টর ফয়েজ উদ্দিনের ওপর হামলা করে রক্তাক্ত করেন। এ ঘটনায় গাজীপুর সদর মেট্রো থানায় তাঁর বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা হয়।

গাজীপুর জেলা কারাগারের জেলার রফিক কাদের বলেন, কয়েদির মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

এদিকে, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১-এ সোমবার রাত ১১টার দিকে কয়েদি দুলাল উদ্দিন বৃকে ব্যথা অনুভব করেন। তাঁকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১-এর জেলার তরিকুল ইসলাম কয়েদির মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তরিকুল ইসলাম বলেন, দুলাল মিয়া কাপাসিয়া থানার একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। বেশ কয়েকবার তাঁকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। সর্বশেষ তিনি গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি এই কারাগারে আসেন। গতকাল রাত ১১টার দিকে দুলাল বুকে ব্যথা অনুভব করলে প্রথমে কারা হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাঁকে তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা আক্তার বলেন, মারা যাওয়া দুই কয়েদির লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়েছে। তাঁদের লাশের ময়নাতদন্তের করা হবে। ওই প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আমার বার্তা/এমই