কৃষককে উপযুক্ত মূল্য না দিলে দেশে কৃষি থাকবে না: খাদ্য উপদেষ্টা

প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৫৮ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, কৃষক পরিশ্রম করে ফসল ফলায়, তাকে যদি উপযুক্ত মূল্য না দেওয়া হয় তাহলে এই দেশে কৃষি থাকবে না, ফসল উৎপাদন হবে না। তাই আমরা চাই, কৃষক তার ফসলের ন্যায্য দাম পাক। যদি আমাদের একটু বেশি দিতেও হয়, তাতে মানুষ বা রাষ্ট্রের বড় কোনো ক্ষতি হবে না।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় সিএসডি প্রাঙ্গণে ধান সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, এবার সরকার চাল ও ধানের দামে ৪ টাকা করে বৃদ্ধি করেছে, যা কৃষকের স্বার্থকে বিবেচনায় রেখেই নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা যখন ৪৯ টাকা কেজিতে চাল কিনছি, তখন বাজারে দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। যারা বাজার দর নিয়ে কথা বলেন তাদের অনুরোধ করব এই মূল্য বৃদ্ধিকে ইতিবাচকভাবে দেখার জন্য।

উত্তরাঞ্চলের ধান সংগ্রহ বিলম্বিত হওয়ার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, উত্তরাঞ্চলে এখনো ধান পাকেনি। সেখানে ফসল ঘরে তুলতে আরও তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। তাই আমরা অপেক্ষা করেছি, যাতে কৃষক ন্যায্যমূল্য পায় এবং মধ্যস্বত্বভোগীরা সুযোগ নিতে না পারে।

সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত আমন মৌসুমে কোনো সিন্ডিকেট হয়নি, এবারও আশা করছি হবে না। যদি হয়, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতবার মিলাররাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা নিজেরাই তা বলেছে।

তিনি আরও বলেন, এবার ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে। গতবার বোরো মৌসুমে ১৩ লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছিল, এবার সেটা ১৪ লাখ। ধানের ক্ষেত্রে ছিল ৩ লাখ মেট্রিক টন, এবার ৩.৫ লাখ মেট্রিক টন। আমরা বিদেশ থেকে আমদানি না করে স্থানীয় বাজার থেকেই সংগ্রহ বাড়াতে চাই।

মিলারদের (চালকলমালিক) উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, আতপ না সেদ্ধ চাল কেনা হবে। আমি বারবার এটা বলেছি, বুঝাতে চেয়েছি। যদি কেউ না বুঝেন, তবে সেটা আমার দুর্ভাগ্য।

অন্তর্বর্তী সরকার কতদিন থাকবে, এ প্রশ্নের জবাবে খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা স্পষ্ট করে বলেন, এটা প্রধান উপদেষ্টার বিষয়। আমাকে দয়া করে এই প্রশ্ন করবেন না। আমি শুধু খাদ্য ও ভূমি সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরই দিতে পারি।

এ সময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ইলিয়াস মিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ, শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা এবং জেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা ইকবাল আজাদ।

উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ১৩৭টি ছোট-বড় হাওরে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ লাখ ২৩ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে। তবে বাস্তবে চাষ হয়েছে তার চেয়েও বেশি ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮০ মেট্রিক টন ধান, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৫ হাজার ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ বছর সরকার এই জেলা থেকে ১৪ হাজার ৬৪৫ মেট্রিক টন ধান এবং ১৩ হাজার ৮১৬ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহ করবে।


আমার বার্তা/এমই