ইতালি প্রবাসী নাহিদ মিয়ার খুনী ইতালিয়ান পুলিশের কাছে গ্রেফতার

প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৫, ২১:৩৬ | অনলাইন সংস্করণ

  মনির হোসেন(মাল্টিমিডিয়া প্রতিনিধি)সখিপুর :

ছবি : প্রতিনিধি

গত ২৭ শে মে ঘটে যাওয়া বাংলাদেশী প্রবাসী নাহিদ ওরফে বিপ্লব কাজী হত্যার মূল অপরাধী ১৮ বছরের একজন কিশোর আঞ্জিও কে গ্রেফতার করেছে ইতালিয়ান স্পেশাল ব্রাঞ্চ ক্যারাবিয়ান। স্পেশাল ব্রাঞ্চ ক্যারাবিয়ান অত্যাধুনিক টেকনোলজি ব্যবহার করে অপরাধীকে সনাক্ত করতে সক্ষম হন ।গত ৩১ শে মে বিকালের দিকে খুনি আঞ্জিও কে চিস্তেরনা দি লাতিনা (Cisterna di latina) শহরের একটি বাড়িতে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়।নাহিদ মিয়ার হত্যাকাণ্ডের পর ১৮ বছর বয়সী যুবকের পলায়ন মাত্র এক সপ্তাহেরও কম স্থায়ী হয়।২৭ মে দুপুর ১২টার কিছু আগে, একটি মোটরসাইকেলে করে এক ব্যক্তি—যার মাথায় একটি ফুল ফেস হেলমেট ছিল এবং যিনি পুরোপুরি কালো পোশাক পরা ও একটি বড় ছুরি নিয়ে—"Toil" পেট্রোল স্টেশনে আসে এবং নাহিদ মিয়াকে ছুরিকাঘাত করে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। ছুরিকাঘাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন, ১১৮ ইমার্জেন্সি মেডিকেল টিমের চেষ্টাও ব্যর্থ হয়।

ঘটনার পরপরই তদন্ত শুরু হয়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে, হত্যাকারীর গতিবিধি বিশদভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। দেখা যায়, সে একটি সাদা BMW GS 650 মোটরসাইকেল চালিয়ে এসেছিল, যা দুই দিন আগে রোম থেকে চুরি হয়েছিল এবং পরে ২৮ মে আরদিয়ায় প্রায় সম্পূর্ণভাবে পোড়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

তদন্তকারীরা মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় তিনজন তরুণকে শনাক্ত করে, যাদের পরিচয় জানা যায় এবং তাদের সাথে হত্যার কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে একজনের কাছ থেকে ঐ ১৮ বছর বয়সী যুবকটি চুরি করেছিল মোটরসাইকেলটি, যা সে রাস্তায় পার্ক করা অবস্থায় নিয়ে যায়। এরপর পুলিশ সন্দেহভাজন যুবকের ওপর নজরদারি শুরু করে, তার ও তার পরিচিতদের মোবাইল ফোন ও পোশাক জব্দ করে।

আঞ্জিও থানায়, প্রসিকিউটরের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে এবং পুলিশকে আরদিয়া এলাকার একটি বনের মধ্যে নিয়ে যায়, যেখানে সে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ১৬ সেন্টিমিটার লম্বা ব্লেডযুক্ত ছুরি, রক্তমাখা হেলমেট ও হত্যার সময় পরা পোশাক লুকিয়ে রেখেছিল। সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষে, তাকে ভেলেত্রি কারাগারে পাঠানো হয়েছে।প্রবাসি নাহিদ মিয়ার বন্ধু এবং ইতালিস্থ টাংগাইল জেলা সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন-অর-রশীদের সাথে মুঠোফোনে কথা বলে জানা যায় য়ে,নিহত নাহিদ মিয়া দুই সন্তানের জনক ছিলেন,বড় সন্তানের বয়স ৫ বছর এবং ছোট সন্তানের বয়স প্রায় ১ বছর।প্রবাসি নাহিদ মিয়ার সন্তান দুটি পৃথিবীর নির্মম বাস্তবতা বুঝে উঠার আগেই চিরদিনের জন্য জন্মদাতা পিতাকে হারিয়ে ফেললো,এরকম বর্বর, হৃদয়হীন ঘটনা যেন আর না ঘটে।

একটি পরিবার আজ চিরতরে ভেঙে গেছে। দুইটি শিশু চিরদিনের জন্য তাদের বাবাকে হারিয়েছে। ইতালি প্রবাসী নাহিদ মিয়ার বুকে তার নিজ কর্মস্থল,হাজারো স্বপ্ন নিয়ে নিজ হাতে গড়া  একটি পেট্রোল পাম্পে ছুড়ি চালিয়ে ৫৭০ ইউরো ছিনিয়ে নেয় অপরাধী এবং নাহিদ মিয়া কে ছুরিকাঘাতের মাধ্যমে জীবন প্রদীপটাকে নিভিয়ে দেয়।নাহিদ মিয়া কে আল্লাহ জান্নাত দান করুক এবং তার রেখে যাওয়া সন্তানদের কে হেফাজত করুক।