নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে, সরকারি কর্মকর্তাদের পরিকল্পনা উপদেষ্টা
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৫, ১৭:৫২ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচনের জন্য এখন থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে জোর দিয়েছেন।
শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রামের সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় টানেল নিয়ে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।
মতবিনিময় সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের আসল কাজ একটা ভালো নির্বাচন দেওয়া। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখা। এখন যেগুলো করছেন, সেগুলো হচ্ছে বাই প্রোডাক্ট। মন্ত্রণালয়ের যেসব সংস্কার করছেন, তা সময়-সুযোগ পাওয়ায় করতে পারছেন। তবে আসল কাজ হলো এখন থেকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া।’
সভায় উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা থাকার কথা স্মৃতিচারণা করেন। ওই সময়ের দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়ে সভায় বলেন, ‘অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার শুরু করা জরুরি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে হলে এটা করতে হবে। তবে অনেক রাজনৈতিক প্রভাবশালী আছেন, ক্যাডার আছেন, তাঁরা অস্ত্র জমা দেবেন না স্বাভাবিক। তবে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। নির্বাচনকালীন বৈধ অস্ত্র জমা নিয়ে রাখতে হবে।’
মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমরা কিছুদিন মাত্র আছি । এরপর চলে যাব। তবে কিছু ট্রেন্ড শুরু করেছেন। সুশাসন একদিনে হয় না। তবে আমরা একদম আগের জায়গায় ফিরে যাব না। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।’
মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেলকে শ্বেতহস্তী প্রকল্প বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। টানেল নির্মাণ করা হলেও এখন তার রক্ষণাবেক্ষণ খরচও উঠছে না বলে জানান উপদেষ্টা।
সভায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহেদ হোসেন জানান, টানেলের ভেতর দিয়ে গাড়ি চলাচলের পরিমাণ কম। এখন গাড়ি চলাচলের পরিমাণ বাড়াতে হলে একটি বিকল্প সড়ক প্রশস্ত করার প্রস্তাব দেন উপদেষ্টার কাছে।
এ সময় সভায় উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘টানেল করার পর কেন চিন্তা করছেন? আগে তো পরিকল্পনা করা দরকার ছিল। এটি এখন শ্বেতহস্তী প্রকল্পে পরিণত হয়েছে। টানেল চালু রাখতে প্রতিদিন লোকসান দিতে হচ্ছে। আবার আনোয়ারা প্রান্তে পাঁচ তারকা-সাত তারকা রিসোর্ট করা হয়েছে। বিরাট টাকা খরচ হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়। তাতেও অনেক টাকা দরকার। আর এমন জনশূন্য জায়গায় কে বিনোদন করতে আসবে। এটা নিয়ে ভাবতে হবে।’
এসব রিসোর্ট বেসরকারি খাতে দেওয়ার চিন্তা আছে জানিয়ে উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, এগুলো দিয়ে দিতে হবে। যদিও কেউ নিতে রাজি হচ্ছে না। দিয়ে দিতে হবে। আয় না হলেও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। দেখাশোনা করবে।
টানেলকে শোপিস আখ্যায়িত করে উপদেষ্টা বলেন, এই শোপিস তো বেশি দিন দেখতে আসবে না মানুষ। টানেল দেখার জিনিস না।
বিভাগীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার উন্নয়ন শারমিন জাহান। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেনসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আমার বার্তা/এমই