চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় ২৫ কোটি টাকার টেন্ডারে অনিয়ম

প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৯ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাতটি প্যাকেজের ২৫ কোটি টাকার কাজের টেন্ডার মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) অধীনে পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়নে সম্প্রতি টেন্ডারটি আহ্বান করা হয়। প্রতিটি গ্রুপে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ঘোষিত মূল্যের চেয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার সুপারিশ করেছে পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ।

গত ২৭ আগস্ট টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশান লিমিটেড দরপত্র মূল্যায়নে বিধিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ করে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ছাড়াও এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী ও দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি দরপত্র পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছেন।

জানা যায়, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী তৌফিকুল ইসলাম গত ৯ জুলাই সাত গ্রুপের ২৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের দরপত্র আহ্বান করেন। এরমধ্যে রয়েছে পৌরসভার সড়ক উন্নয়ন ও সংস্কার, ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার ও উন্নয়ন এবং বিভিন্ন সড়কে আলোকায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন। দরপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ১৪ আগস্ট এবং ওইদিনই সব দরপত্র উন্মুক্ত করা হয়। এরপর চলে দরপত্র মূল্যায়নের কাজ। নিম্ন দরদাতাকে বাদ দিয়ে গত ২৭ আগস্ট উচ্চ দরদাতাদেরকেই কাজ দেয়ার সুপারিশ করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, ৫নং প্যাকেজে মোট ৯টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। এর মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠান ঘোষিত মূল্যের নিম্নদর দিয়েছে। অন্যদিকে, ছয়টি প্রতিষ্ঠান দিয়েছে ৬ ভাগ উচ্চদর। ৬নং প্যাকেজে মোট সাত ঠিকাদার দরপত্র জমা দেন। এরমধ্যে দুজন দিয়েছে নিম্নদর। তবে ৫টি প্রতিষ্ঠান দিয়েছে ৭ ভাগ উচ্চদর। ৭নং প্যাকেজে আট ঠিকাদার দরপত্র জমা দেয়। এর মধ্যে দুজন দিয়েছে নিম্নদর এবং ছয়জন ৭ ভাগ ঊর্ধ্বদর।

১০নং প্যাকেজে মোট ১০ জন ঠিকাদার দরপত্র জমা করেন। তাদের মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন ও ৬টি ১০ ভাগ উচ্চদর দিয়েছে।

প্রকল্পের ১১নং প্যাকেজে ৭ জন ঠিকাদার দরপত্র উত্তোলন ও জমা করেন। এর মধ্যে দুজন সর্বনিম্ন দর প্রস্তাব করে। বাকি ৫ জন ১০ ভাগ উচ্চদর প্রস্তাব করে। প্যাকেজ নং ১৩-তে মোট সাতজন দরপত্র জমা করেন। এরমধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন একই দর ৫টি ১০ ভাগ ঊর্ধ্বদর দিয়েছেন। 

প্রকল্পের ১৭নং প্যাকেজে মোট সাতটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা করে। এরমধ্যে দুটি সর্বনিম্ন দর এবং ৫টি ১০ ভাগ ঊর্ধ্বদর প্রস্তাব করে। টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি প্রতিটি প্যাকেজে ঊর্ধ্বদর প্রস্তাবকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার সুপারিশ করেছে।

বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষ দরপত্র মূল্যায়নে চরম পক্ষপাতিত্ব ও অনিয়ম করেছেন। তারা বিশেষ মহলের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সরকারের আর্থিক ক্ষতি জেনেও উচ্চদরে কাজের সুপারিশ দিয়েছেন। আমরা এ অনিয়মের সঠিকভাবে তদন্তের দাবি করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী তৌফিকুল ইসলাম বলেন, কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে সাতটি প্যাকেজে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের দর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। কাগজপত্র সঠিক না হলে উচ্চ দরদাতাদের কাজ দেয়াটাই স্বাভাবিক। দরপত্র মূল্যায়নে কোনো অনিয়ম করা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
 
আমার বার্তা/এল/এমই