বিএসবি গ্লোবালের ‘প্রতারণা’
কানাডাগামী ছাত্রদের ৩০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:৫২ | অনলাইন সংস্করণ
অনলাইন ডেস্ক
কানাডায় পাঠানোর নামে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান এম কে বাশার। প্রতারণার শিকার শিক্ষার্থীরা সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর গুলশানে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা রাতে চেয়ারম্যান বাশারের স্ত্রী ও বিএসবি গ্লোবালের ভাইস-চেয়ারম্যান খন্দকার সেলিনা রওশন, জিএম আবু জাহিদ ও ক্যাশিয়ার মাহবুব হোসেনকে গুলশান থানা এলাকায় কর্তব্যরত সেনা কর্মকর্তাদের কাছে সোপর্দ করেন। একই সঙ্গে শিগগিরই তারা প্রতিষ্ঠানটিকে টাকা ফেরত দেওয়ার আলটিমেটাম দেন।
মঙ্গলবারও (১৩ আগস্ট) তারা বিএসবি কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও গুলশান থানায় যাবেন বলে জানা গেছে।
প্রতারণার শিকার ছাত্রদের প্রতিনিধি মেহেদী হাসান জানান, গত দুই বছর ধরে কানাডায় পাঠানোর কথা বলে টাকা জমা নিয়েছে বিএসবি গ্লোবাল। তারা কানাডার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও টিউশন ফি বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা জমা নেয়। অনেকে তার পরিবারের সদস্যদের জন্যও টাকা জমা দিয়েছেন। কেউ ১২ লাখ, কেউ ১৫ লাখ টাকাও দিয়েছেন। তারা সবাই এখন বিপাকে পড়েছেন।
সেলিম রেজা নামে একজন ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমার স্ত্রীর জন্য ১২ লাখ টাকা জমা দিয়েছিলাম। গত বছর টাকা দিলেও তারা (বিএসবি) আমার স্ত্রীকে বিদেশে পাঠাতে পারেননি। আবার টাকা ফেরতও দিচ্ছেন না। এতদিন তারা উল্টো হুমকি দিয়ে আসছিলেন। বেশি কথা বললে ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ নেতাদের দিয়ে শায়েস্তা করার হুমকিও দিয়েছিলেন। এখন পরিস্থিতি পরিবর্তন হওয়ায় আমরা সবাই সাহস পেয়েছি। আশা করছি, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আমাদের টাকাগুলো ফেরত পাবো।’
এদিকে, সোমবার দিনভর কার্যালয় ঘেরাও ও বিক্ষোভকালে বক্তব্য দেন ভুক্তভোগী আল-আমিন, সোহেল রানা, সুমন হোসেন, নাসরিন সুলতানা, আবু নাঈম, আনিসুর রহমান, ও জাবের হোসাইন প্রমুখ।
তারা বলেন, কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি বাবদ প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা নিয়েছে বিএসবি গ্লোবাল। টাকার পরিমাণ আরও বেশিও হতে পারে। বিএসবি চেয়ারম্যান যখন আমাদের কানাডা পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছেন, তখন আমরা টাকা ফেরত চেয়েছি। তিনি টাকা না দিয়ে বারবার তারিখ পরিবর্তন করেছেন। দেড় বছরেও অনেকে টাকা ফেরত পাননি।
তারা প্রতারকচক্রকে গ্রেপ্তার করে টাকা ফেরত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কয়েকবার গুলশান থানায় গিয়ে সেখানে অবস্থান করা সেনা কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করেন। পরে সেনা কর্মকর্তারা টিউশন ফি বাবদ জমাকৃত টাকা উদ্ধারে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
তবে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের কার্যালয়ে গিয়েও সেনা কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এম কে বাশারকে খুঁজে পাননি বলে জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে বিএসবি গ্লোবালের চেয়ারম্যান এম কে বাশারের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানের অন্য দায়িত্বে থাকা একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তারা কিছু জানেন না বলে দাবি করেন। এ বিষয়ে তারা গণমাধ্যমে কথা বলবেন না বলেও জানিয়ে দেন।
আমার বার্তা/জেএইচ