চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ২০.৩৮ শতাংশ

প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৫ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

২০২৪-২৫ অর্থবছরের নবম মাস, অর্থাৎ মার্চে ৪২ হাজার ৯৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৬৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্য দিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) মোট রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকায়।

যদিও এনবিআরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় এ ৯ মাসে মোট ৩ লাখ ২২ হাজার ১৫২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল। এ সময় পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৭৯ দশমিক ৬২ শতাংশ; অর্থাৎ সে অনুযায়ী অর্থবছরের প্রথম নয় মাস শেষে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের ঘাটতির হার দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

লক্ষ্যের তুলনায় ঘাটতি থাকলেও এ সময় রাজস্ব আহরণে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধির দেখা পেয়েছে এনবিআর। সংস্থাটির হিসাবে একক মাস হিসেবে চলতি অর্থবছরের মার্চে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ।চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় মোট রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস (জুলাই-মার্চ) পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার ৯২ দশমিক ২৩ শতাংশ রাজস্ব আদায় করেছিল এনবিআর। এর মধ্যে কাস্টমস থেকে ৮৯ দশমিক ১১ শতাংশ, মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে ৯৫ দশমিক ৮৬ ও আয়কর থেকে ৯০ দশমিক ৯৫ শতাংশ আয় হয়। গত অর্থবছরে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। জুলাই-মার্চ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৮১ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকার বিপরীতে আয় হয় ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছিল ৯২ দশমিক ২৩ শতাংশ।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৭৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। এর মধ্যে কাস্টমস থেকে ৮১ দশমিক ৮৪ শতাংশ, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট থেকে ৮৩ দশমিক ৬ ও আয়কর থেকে ৭৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয় এনবিআরকে। রাজস্ব আহরণের দায়িতে থাকা প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, গত মার্চ পর্যন্ত এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ২২ হাজার ১৫২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

এখন পর্যন্ত আদায় হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। মার্চ পর্যন্ত সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার হিসাবে রাজস্ব আহরণ ৭৯ দশমিক ৬২ শতাংশ অর্জন হলেও মোট সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছে। আর গত অর্থবছরের একই সময় পর্যন্ত আদায় হয়েছিল ২ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯২ কোটি ৩১ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধির হিসাবে এটি ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের মার্চের রাজস্ব আহরণের সাময়িক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যের তুলনায় বড় ধরনের ঘাটতি হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে আয়কর ও ভ্রমণকর, মুসক এবং আমদানি-রপ্তানি খাতে শুল্ক ও মুসক বাবদ আহরণ। এর মধ্যে আয়কর ও ভ্রমণকর খাতে ঘাটতির মাত্রা সবচেয়ে বেশি। এনবিআরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় এ বাবদ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ১ লাখ ১৬ হাজার ৬৭৬ কোটি ২০ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৮৬ হাজার ৯২০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৭৪ দশমিক ৫০ শতাংশ, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৯ দশমিক ৩২ শতাংশ কম। তবে আহরণে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৬৭শতাংশ। একক মাস হিসেবে শুধু মার্চে ১৭ হাজার ৩৭৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ১৩ হাজার ৭৬৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এ খাতে মোট সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা।

এ ৯ মাসে স্থানীয় পর্যায়ে মূসক বাবদ আহরণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৪৯ কোটি ১৬ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৯৫ হাজার ৩১১ কোটি টাকা। এ খাতে এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৮৩ দশমিক ৬ শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৪ দশমিক ৪২ শতাংশ কম। তবে এ ৯ মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আহরণে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে একক মাস হিসেবে মার্চে মূসকের প্রবৃদ্ধি মাত্র ১ দশমিক ১৮ শতাংশ। এ মাসে ১৩ হাজার ৭৭০ কোটি ১৬ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ১১ হাজার ৮৮ কোটি টাকা। স্থানীয় পর্যায়ে মূসকের মোট সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা।

 

আমার বার্তা/এল/এমই