মেডিকেলে ভর্তিতে নারীরা এগিয়ে, পিছিয়ে পড়ছেন পুরুষ শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৪ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় নারীরা পুরুষদের ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই নারী। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে দেশের স্বাস্থ্যখাতে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হতে পারে। তারা মনে করছেন, পুরুষ শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে কোটার মতো বিশেষ সুবিধার প্রয়োজন হতে পারে।  

চলতি বছরে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন এক লাখ ৩১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী, যার মধ্যে পাস করেছেন ৬০ হাজার ৯৫ জন। পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা পুরুষদের তুলনায় ১৫ হাজার ৭৭৭ জন বেশি।  

শিক্ষার্থীদের মতে, এমবিবিএস পড়াশোনা শেষ করতে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয়, ফলে অনেক পুরুষ শিক্ষার্থী বিকল্প পেশায় আগ্রহী হচ্ছেন। অন্যদিকে, নারীরা পরিবারের পাশাপাশি কর্মজীবন সামলানোর সুযোগ থাকায় মেডিকেল শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন।  

নারীদের এই অগ্রগতি নতুন কিছু নয়। গত তিন দশক ধরেই তারা মেডিকেল শিক্ষায় এগিয়ে আছেন। ২০১৭ সালে যেখানে নারী-পুরুষ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় সমান, সেখানে গত সাত বছরে পুরুষ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ শতাংশ কমে গেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ১০ বছরে পুরুষ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ শতাংশের নিচে নেমে আসতে পারে। অথচ একসময় নারী শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করতে ১০ শতাংশ কোটা সুবিধা দেওয়া হয়েছিল।  

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মনে করেন, নারীদের এই আধিপত্য ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে। তিনি বলেন, 'সমতা বজায় রাখতে পুরুষ শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধার কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।'  

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ 'নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ' বলেন, 'নারী চিকিৎসকদের বড় অংশ ধাত্রীবিদ্যা, চক্ষু এবং মেডিসিনে বিশেষায়িত হন। তবে পুরুষ চিকিৎসকের সংখ্যা কমতে থাকলে অর্থোপেডিকস, নিউরোলজি ও সাধারণ শল্যচিকিৎসার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে সংকট দেখা দিতে পারে।'  

মেডিকেলে ভর্তিতে নারীরা এগিয়ে থাকলেও অনেকেই ডিগ্রি অর্জনের পর চিকিৎসা পেশায় সক্রিয় হচ্ছেন না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্বাস্থ্যখাতে দক্ষ জনবল নিশ্চিত করতে নারীদের পেশায় অংশগ্রহণের বাধাগুলো দ্রুত চিহ্নিত করা প্রয়োজন।