ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা গ্লোবাল এভিয়েশন এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত

শিক্ষা বিস্তারে অনন্য অবদান

প্রকাশ : ১২ মে ২০২৫, ১৮:২৮ | অনলাইন সংস্করণ

  হাফিজ রহমান:

ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লাকে গ্লোবল এভিয়েশন এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড সনদ তুলে দিচ্ছেনগ্লোবাল এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এর মহাসচিব সালাম মাহমুদ ও প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাফিজ রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য মোহাম্মদ সাইফুল হক খান।

বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তারে নিরবে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছেন ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা। বর্তমানে তিনি সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ এর প্রিন্সিপাল এবং ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ ও ড.মাহবুবুর রহমান মোল্লা ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র প্রতিষ্ঠাতা। এ প্রতিষ্ঠানগুলো দেশ- বিদেশে ব্যাপক আলোচিত ও সমাদৃত। শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা সাউথ কোরিয়ার হ্যাভেনলি কালচার ওয়ার্ল্ড পিস রেস্টোরেশন অব লাইট সিওল- এর পিস অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করছেন। আধুনিক শিক্ষা বিস্তারে নিজ দেশে অবদান রাখতে তিনি নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর স্বপ্ন বাংলাদেশী তরুণ-তরুণীরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা গ্রহন শেষে দেশ সেবায় ব্রতী হবে। পেশাগত ব্যস্ততার মাঝে নানা ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত এই শিক্ষাবিদ। সৃজনশীলতায় বিশ্বাসী সমাজহিতৈষী ও দূরদর্শী ব্যক্তিত্ব ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে একজন পরোপকারী আদর্শ চরিত্র হিসেবে পরিচিত। ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ ও ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তিনি শিক্ষা সেবার নতুন ধারার প্রবর্তন করেন। চীনের একটি  ইউনিভার্সিটির সাথে সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে  ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকটি সাবজেক্টে পড়াশোনা করে চীনে স্কলারশিপ নিতে পারবেন। এতে করে চীনের সাথে সুসম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে এবং বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তার ও কর্মসংস্থানে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

নিরহংকার, নির্লোভ এবং নিরপেক্ষ মানসিকতার অধিকারী ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা নিজের চারিত্রিক গুণাবলির সুবাস ছড়িয়ে সবার প্রিয়জন হয়ে উঠেছেন। পরোপকারী, মানবতাবাদী ও একজন দূরদর্শী শিক্ষানুরাগী হিসেবে সকল স্তরে  বেশ সমাদৃত তিনি। দেশের শিক্ষা বিস্তার এবং ওয়ার্ল্ড শিক্ষা ব্যবস্থায় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লার নানামুখী কর্মকাণ্ডে অসামান্য অবদানের জন্যে ‘গ্লোবাল এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন কর্তৃক “গ্লোবাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৫”- এ ভূষিত করা হয়।

গত ২মে ২০২৫ শুক্রবার পর্যটন নগরী কক্সবাজারে একটি রিসোর্টে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ অ্যাওয়ার্ড তুলে দেয়া হয়। সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবি বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল, কিংবদন্তি চিত্রনায়িকা রোজিনা  এবং বাংলাদেশের মার্শাল আর্টের জনক ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম এই অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ট্রাভেলার্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট তৌহিদা সুলতানা রুনু, কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন এর প্রেসিডেন্ট এম এ মোতালেব শরীফ, কক্সবাজার হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খানসহ কক্সবাজার বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গ্লোবাল এভিয়েশন অ্যান্ড জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এর মহাসচিব সালাম মাহমুদ। অনুষ্ঠান শেষে দেশের পর্যটন শিল্প, শিক্ষা বিস্তার, ফিল্মসহ নানা বিষয়ে অবদান রাখায় গুণীজনদের বিশেষ সন্মাননা দেয়া হয়।

সম্প্রতি শিক্ষাবিদ ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে মিলিত হলে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ধারাবাহিক সাফল্যে এগিয়ে চলার গল্প সম্পর্কে বলেন; ২০১০ সালে ২৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে পথচলা শুরু করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ হাজার। রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ীর নিকটবর্তী মাতুয়াইল এলাকায় ঢাকা-সিলেট এক্সপ্রেসওয়ে-সংলগ্ন এই প্রতিষ্ঠান মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি পরিবেশের জন্য। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাসহ নিশ্চিত করা হয়েছে গুণগত শিক্ষার প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা। রয়েছে সুপরিকল্পিত ও সুসজ্জিত শ্রেণিকক্ষ, অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, লিফট, সিসি ক্যামেরা, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, পরিবহনব্যবস্থা ও সুবিশাল মাঠ। সম্পূর্ণভাবে পৃথক ব্যবস্থাপনায় প্রভাতি ও দিবা শাখায় শিক্ষার্থীদের ক্লাসের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। প্রায় ২০০ জন সুদক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদান করে চলেছেন। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে এখানে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে ইংলিশ ভার্সন চালু করা হয়েছে।

>> মূল্যায়ন ও পুরস্কার

ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষার্থী তৈরিতে নিয়মশৃঙ্খলা ও সৃজনশীলতার বিকাশকে অগ্রাধিকার দেয়। প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় কাউন্সেলিং সেবা। শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস মূল্যায়নে সুপরিকল্পিতভাবে ক্লাস টেস্ট, ইনকোর্স ও সেমিস্টারভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় এখানে। পড়াশোনার আগ্রহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টিতে এ কলেজ প্রতি পরীক্ষার ফল মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গ্রিন কার্ড ও গোল্ড কার্ড বিতরণ করে। এভাবে পুরো শিক্ষাবর্ষে সর্বোচ্চসংখ্যক গোল্ড কার্ড পাওয়া শিক্ষার্থীরা ‘ডিএমআরসি অলরাউন্ডার’ পুরস্কারে মনোনীত হয়। এ ছাড়া প্রতিবছর শিক্ষাসফরের মাধ্যমে বাস্তবজ্ঞান অর্জন ও আনন্দ উপভোগের ব্যবস্থা করা হয়। কলেজটি প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই আদর্শ ও উন্নত শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে সদাচারী, মানবিক, নীতিনিষ্ঠ, দায়িত্বসচেতন ও জ্ঞানপিপাসু একটি প্রজন্ম নির্মাণ আমাদের লক্ষ্য।

>> ডিজিটাল সুবিধা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পুরো ডিজিটাল সিস্টেমের আওতায় পরিচালিত হয়। শিক্ষার্থীদের যাবতীয় তথ্য সফটওয়্যারে সংরক্ষণ করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ, অনুপস্থিতি, বেতন ও অন্যান্য ফি পরিশোধের তথ্যাদি এসএমএসের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে অবহিত করা হয় অভিভাবকদের। এ ছাড়া কলেজের নিজস্ব ডিএমআরসি পোর্টাল অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক রেকর্ড ও পরীক্ষার ফল জানানো হয়। ক্লাসের জটিল বিষয়গুলো সহজবোধ্য করতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা প্রজেক্টরের মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনা করেন। সাহিত্য ও বিজ্ঞানচর্চায় এর লাইব্রেরিতে রয়েছে ৩ হাজারের বেশি বই।

ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের অধ্যক্ষ, মো. ওবায়েদউল্লাহ নয়ন বলেন, সাম্প্রতিক বিশ্বে প্রযুক্তিগত উন্নতির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় মানবিক মূল্যবোধের উন্নতি তথা দেশ, জাতি ও মানবসমাজের ক্রমবর্ধমান সংকট মোকাবিলার যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেগুলো সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ অল্প সময়েই দেশের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উন্নীত হতে পেরেছে তার কর্মকৌশল তথা কর্মপ্রচেষ্টার সমন্বয়ে।

>> পরিবহনব্যবস্থা

দূরবর্তী শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য রয়েছে কলেজের নিজস্ব পরিবহন সেবা। নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার আশপাশে প্রায় সব রুটে এই সেবা দেওয়া হয়। রাইড ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে যাতায়াত সেবা নিশ্চিতে এ কলেজের রয়েছে ২৮টি বাস। মানসম্মত ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করতে রয়েছে ক্যানটিন-সুবিধা। এ ছাড়া ধর্মচর্চার জন্য রয়েছে প্রার্থনাকক্ষ।

>> সহশিক্ষা কার্যক্রম

প্রতিযোগিতার এই যুগে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল করে তোলার জন্য রয়েছে বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম। এখানে আছে ডিএমআরসি সায়েন্স অ্যান্ড আইসিটি ক্লাব, ডিবেট ক্লাব, ডিএমআরসি স্পোর্টস ক্লাব, লিটারারি অ্যান্ড কালচারাল ক্লাব, ফটোগ্রাফি ক্লাব ও রোভার স্কাউট গ্রুপ।

>> প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য

ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ প্রতিষ্ঠার তৃতীয় বছরেই ঢাকা বোর্ডে অষ্টম স্থান অর্জন করেছে। এ প্লাসসহ প্রায় শতভাগ পাসের রেকর্ড আছে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। ২০২৪ সালে ২ হাজার ৭৪০জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাসের হার ১০০ শতাংশ। বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৭৬৫ জন শিক্ষার্থী।

ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ স্বল্প সময়ের পথচলায় এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ছেন। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজারের বেশী শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।  

 

আমার বার্তা/এমই