প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে অচল বিদ্যালয়

প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৪২ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে করাসহ তিন দফা দাবি আদায়ে তৃতীয় দিনের মতো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ শিশু শিক্ষার্থীরা। ব্যহত হচ্ছে পাঠদান।

সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকেই শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষকরা।
 
নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে আন্দোলনরতরা বলেন, তৃতীয় শ্রেণির বেতনে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী গড়ে তোলা সম্ভব নয়। অনতিবিলম্বে দাবি না মানা হলে কর্মসূচি আরও কঠোর করার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
 
সকালে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম নেতা মু. মাহবুবর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি দুইটাই চলবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।
 
এছাড়া সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য চলছে তাদের পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ শিশু শিক্ষার্থীরা। ব্যহত হচ্ছে পাঠদান।
 
তবে শিক্ষকদের এ দাবি আদায় হলে তারা শুক্র-শনিবার পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি নিরসন করবেন বলে আশ্বাস দেন।
 
আজ বিকেলে শিক্ষকদের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অর্থ ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার সাথে আলোচনার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে। এতে একটা সমাধান আসবে বলে আশা করছেন সহকারী শিক্ষকরা।  
 
এদিকে এর আগে রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দেন ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’র নেতারা। গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে তারা কর্মবিরতি ‘আপাতত স্থগিত’ রাখার কথা জানান। এছাড়াও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং তথ্য অধিদফতর থেকেও একই তথ্য জানিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। তবে মধ্যরাতে শিক্ষকদের তোপের মুখে সিদ্ধান্ত বদল করেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের নেতারা।
 
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের তথ্যমতে, বর্তমানে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন ৩ লাখ ৮৪ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষক। তাদের অধিকাংশই সহকারী শিক্ষক। আর এসব বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে প্রায় ৯৬ লাখ শিশুশিক্ষার্থী। শিক্ষকরা কর্মবিরতির ডাক দিলে এ শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়।
 
এদিকে, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় প্রান্তিক বা বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। সেই হিসাবে মাত্র তিন সপ্তাহ বাকি রয়েছে বার্ষিক পরীক্ষার। এমন সময়ে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ও বিদ্যালয়ে ছেড়ে ঢাকায় এসে অবস্থান কর্মসূচিতে থাকায় শিখন ঘাটতিতে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।
 
এছাড়াও দীর্ঘ ১৬ বছর পর এবার ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ পরীক্ষার প্রস্তুতিতেও ভাটা পড়েছে শিক্ষার্থীদের।

আমার বার্তা/এল/এমই