সাত কলেজের উন্নয়ন ও সুনাম রক্ষায় অংশীজনদের যৌথ সুপারিশ

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৪৫ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

রাজধানীর সরকারি সাতটি কলেজকে নিয়ে প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র খসড়া অধ্যাদেশ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় অংশীজনরা সাত কলেজের দীর্ঘদিনের সুনাম, স্বাতন্ত্র্য ও একাডেমিক ঐতিহ্য বজায় রাখার দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে উন্নয়ন, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও শিক্ষার্থীদের সেবা বাড়াতে সমন্বিত পরিকল্পনা নেওয়ার সুপারিশও করেন তারা।  

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।  এতে সভাপতিত্ব করছেন শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সি আর আবরার।

সভায় ঢাকা কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মীর সরফত আলী সপু বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ সময়ে বড় ধরনের কাঠামোগত সিদ্ধান্ত হলে তা সংশ্লিষ্টদের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।  

তিনি বলেন, আমরা সাত কলেজের বিরুদ্ধে নই, আমরা চাই সাত কলেজ এগিয়ে যাক। তবে ঢাকা কলেজসহ ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোর সুনাম রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। খসড়া অধ্যাদেশে এসব কলেজের স্বতন্ত্র মর্যাদা বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি জানান, তার পক্ষ থেকে কিছু লিখিত প্রস্তাব সভায় জমা দেওয়া হয়েছে।

সভায় অংশীজনদের আশ্বস্ত করে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, আগামী ২০ তারিখ পর্যন্ত মতামত গ্রহণ প্রক্রিয়া খোলা থাকবে। এ সময়ের মধ্যে যে কেউ লিখিত মতামত পাঠাতে পারবেন।

মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ইডেন কলেজ অ্যালামনাই নেত্রী হেলেন জেরিন খান। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো ও ফ্যাকাল্টি বিন্যাস নিয়ে অংশীজনদের স্পষ্ট ধারণা দেওয়া প্রয়োজন। 

তিনি বলেন, চারটি ফ্যাকাল্টি নিয়ে হাইব্রিড মডেল করা হচ্ছে- এটি ঠিক কীভাবে কাজ করবে, বিশেষ করে মেয়েদের ক্যাম্পাসের ক্ষেত্রে কীভাবে প্রয়োগ হবে- এসব বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দরকার।

তিনি জানান, অংশ নেওয়া অধিকাংশই ফ্যাকাল্টিভিত্তিক মডেলের বাইরে বিকল্প কাঠামোর প্রস্তাব দিয়েছেন।

অন্যদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সভায় অংশ নেওয়া প্রতিনিধিরা আলোচনায় বেশ ইতিবাচক মনোভাবই তুলে ধরেন। 

তারা বলেন, সাত কলেজের দীর্ঘদিনের একাডেমিক চ্যালেঞ্জ ও প্রশাসনিক জটিলতা সমাধানের সুযোগ হিসেবে প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’কে দেখা যেতে পারে। 

অংশীজনেরা মনে করেন, সঠিক কাঠামো ও বাস্তবসম্মত নীতিমালা প্রণয়ন হলে এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মান বাড়াতে এবং শিক্ষার্থীদের সেবাপ্রাপ্তি সহজ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সভায় তারা আরও উল্লেখ করেন, ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য ও ইতিহাস রক্ষা করে নতুন কাঠামো দাঁড় করানো গেলে এটি দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। মন্ত্রণালয়কে তারা শিক্ষা অভিজ্ঞতা, মান উন্নয়ন ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৬ মার্চ সরকার রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে পৃথক করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামে নতুন একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের ঘোষণা দেয়। প্রস্তাবিত নামটি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) নির্ধারণ করে। কলেজগুলো হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ।


আমার বার্তা/এমই