নতুন গবেষণা

৪ হাজার বছর আগে ক্যান্সারের চিকিৎসার চেষ্টা করতেন মিশরীয়রা

প্রকাশ : ২৯ মে ২০২৪, ১২:০০ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

চার হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরীয়রা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ক্যান্সারের চিকিৎসা করার চেষ্টা করতেন বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। নতুন এক গবেষণায় কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকওয়ার্থ কালেকশনে থাকা ২৬৮৬ থেকে ২৩৪৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দের একটি মানুষের মাথার খুলি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। মাথার খুলিতে একটি প্রাথমিক টিউমারের প্রমাণ রয়েছে, পাশাপাশি ৩০টিরও বেশি ছোট, মেটাস্ট্যাটিক ক্ষত রয়েছে।

গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন, এই ক্ষতগুলো কাটা চিহ্নে বেষ্টিত ছিল। সম্ভবত ধাতব যন্ত্রের মতো ধারালো বস্তু ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল অস্ত্রোপচারের যন্ত্র।

গবেষকরা বলেন, এ থেকে বোঝা যায় প্রাচীন মিশরীয়রা রোগীর চিকিৎসার জন্য অস্ত্রোপচারের চেষ্টা করেছিল। যে মাথার খুলি বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা, সেই ব্যক্তি একজন পুরুষ ছিলেন।

এখন পর্যন্ত ক্যান্সারের প্রাচীনতম পরিচিত বিবরণটি প্রায় ১৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে এসেছিল। সেটিও এসেছিল মিশর থেকে।

বুধবার (২৯ মে) ফ্রন্টিয়ার্স ইন মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত নতুন গবেষণার ফলাফল পরবর্তীকালে আধুনিক ওষুধ কখন শুরু হয়েছিল, সে সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে বদলে দিতে পারে।

গবেষক এবং স্পেনের সান্তিয়াগো ডি কম্পোস্তেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্মবিদ এডগার্ড কামারোস পেরেজ বলেন, আমরা যা পেয়েছি তা সরাসরি ক্যান্সারের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি অস্ত্রোপচারের প্রথম প্রমাণ। এখান থেকেই আধুনিক চিকিৎসার শুরু।

গবেষক দলটি ৫০ বছর বয়সী আরেক নারীর মাথার খুলিও বিশ্লেষণ করেছে। যে নারী ৬৬৪ থেকে ৩৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে বেঁচে ছিলেন। এ খুলিটিও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকওয়ার্থ সংগ্রহে রাখা হয়েছে। পুরুষের খুলির মতো এই নারীর মাথার খুলিতেও একটি বড় ক্ষত ছিল, যা ক্যান্সারের ইঙ্গিত দেয়। তবে তার মাথার খুলিতে দুটি অতিরিক্ত ক্ষত ছিল, যা আঘাতজনিত।

আঘাতজনিত দুটি ক্ষতই সেই সময়ে নিরাময় হয়েছিল। এ বিষয়টি ইঙ্গিত দেয় যে, প্রাচীন মিশরের ওষুধ চিকিত্সার জন্য যথেষ্ট উন্নত ছিল। ক্যান্সার নিরাময়ে তারা বেশ চেষ্টা করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।

কামারোস পেরেজ বলেন, নতুন অনুসন্ধানে দেখা গেছে - প্রাচীন মিশরীয়দের চিকিৎসাজ্ঞানের ক্ষেত্রে ক্যান্সার ছিল একটা 'সীমান্ত'। তারা চেষ্টা করেছিল কিন্তু সফলভাবে ক্যান্সারের চিকিত্সা করতে ব্যর্থ হয়েছিল।

সহস্র শতাব্দী ধরে মানুষ কীভাবে ক্যান্সারের সাথে মোকাবিলা করেছে, সে সম্পর্কে আরও জানতে গবেষণা দলটি এসব নিয়ে কাজ করছে।

 

তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স