গাজায় যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত ১৯ লাখ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৯ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

ঘরবাড়ি ছেড়ে নতুন গন্তব্যের পথে ফিলিস্তিনিরা। 

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধে ১৯ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয়ক সিগরিদ কাগ। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে তিনি এ তথ্য জানান।

টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার খান ইউনিসের বাসিন্দাদের সরে যেতে ইসরায়েলের নতুন আদেশে ‘গভীর উদ্বেগের’ কথা জানান জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয়ক।

জাতিসংঘের এ কর্মকর্তা বলেন, ফের বাস্তুচ্যুত হলো ১০ লাখের বেশি মানুষ, যারা আশ্রয় ও নিরাপত্তার জন্য মরিয়া। বর্তমানে গাজাজুড়ে বাস্তুচ্যুত ১৯ লাখ মানুষ। তিনি আরও বলেন, ‘খান ইউনিস এলাকা খালি করা সংক্রান্ত আদেশ জারির প্রতিবেদন নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খান ইউনিসের আল কারারা, বানি সুহাইলা ও অন্যান্য এলাকার বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ইসরায়েলি আদেশের ভুক্তভোগী আড়াই লাখের মতো মানুষ।

ইসরায়েলের হামলায় গাজায় কমপক্ষে আট হাজার ৫৭২ ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে ১০০ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া গাজা ও পশ্চিম তীরে কমপক্ষে ৪৯৭ জন শিক্ষক ও প্রশাসক নিহত এবং তিন হাজার ৪০২ জন আহত হয়েছেন। 

মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ফিলিস্তিন সংবাদমাধ্যম ওয়াফা জানায়, গাজায় ৩৫০টিরও বেশি সরকারি স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতিসংঘ পরিচালিত ৬৫টি স্কুল ভবন বোমা হামলা ও ধ্বংস করা হয়েছে। গাজার প্রায় ছয় লাখ ২০ হাজার শিক্ষার্থী স্কুলে ভর্তি হতে পারছে না, তাদের অধিকাংশ মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে। গাজা যুদ্ধে এখনো পর্যন্ত প্রায় ৩৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৮৭ হাজার মানুষ আহত হয়েছে।

বুধবার পর্যন্ত গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৭৯২৫ জন বলে নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। ৯ মাস ধরে চলা অবিরাম হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৮৭ হাজার জনেরও বেশি।

জাতিসংঘ অনুমান করেছে আড়াই লাখের মতো ফিলিস্তিনি ইসরাইলের সামরিক আদেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে যাতে লোকেরা দক্ষিণ শহর খান ইউনিসের কাছাকাছি এলাকা ছেড়ে চলে যায়। কারণ গাজায় মোট বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১৯ লাখ পৌঁছেছে বলে অনুমান করা হয়েছে।

অধিকৃত পশ্চিম তীরে নুর শামস শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি বিমান হামলায় চারজন নিহত হওয়ার ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় ওই এলাকায় একজন নারী ও একটি শিশুসহ মোট ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ছয়ে পৌঁছেছে।

সিগরিদ কাগ বলেন, গাজার বেসামরিক নাগরিকরা অন্তহীন দুর্দশায়। তাদের গৃহজীবন তছনছ হয়ে গেছে; গোটা জীবন ওলট-পালট হয়ে গেছে। তার ভাষ্য, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় পৌঁছাচ্ছে না পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী। মানবিক বিপর্যয় রোধে বিশেষত দক্ষিণ গাজায় নতুন সীমান্ত ক্রসিং খোলা দরকার। 

 

আমার বার্তা/এমই