সাগরে ভাসতে ভাসতে ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছাল ৭৬ রোহিঙ্গা

প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:২৮ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ৭০ জনেরও বেশি জাতিগত রোহিঙ্গা শরণার্থী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছেন। বিপুল সংখ্যক এসব রোহিঙ্গাকে বহনকারী কাঠের নৌকা দেশটির আচেহ প্রদেশের উপকূলে পৌঁছায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে ওই রোহিঙ্গাদের নামতে দিতে অস্বীকৃতি জানালেও পরে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে রাষ্ট্রহীন এসব মানুষ সেখানে নামেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূলে ৭০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা এসেছেন বলে বৃহস্পতিবার দেশটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা প্রায়ই নৌকায় চেপে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ডসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

আঞ্চলিক পুলিশের প্রধান নোভা সূর্যদারু রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বুধবার পূর্ব আচেহের পেরিউলাক অঞ্চলে ৪০ জন পুরুষ, ৩২ জন নারী ও চার শিশুকে নিয়ে একটি কাঠের নৌকা পৌঁছেছে। নৌকাটি বিকেলে সমুদ্র সৈকতে পৌঁছালেও রোহিঙ্গাদের নামতে দিতে অস্বীকার করে স্থানীয় বাসিন্দারা। অবশেষে রাত ৮টার দিকে তাদের নৌকা থেকে নামার অনুমতি দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, “তারা (রোহিঙ্গা শরণার্থী) নৌকাটি ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল... আর তাই, আমরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে আলোচনা করেছি এবং ব্যাখ্যা করেছি যে— নৌকাটি আবারও অন্য কোনও গন্তব্যে যাত্রা করা অসম্ভব। পরে তাদের অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”

বস্তুত, মিয়ানমারের সংখ্যালঘু জাতিসত্ত্বা রোহিঙ্গাদের বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি বলে বিবেচনা করা হয়। ২০১৭ সালের পর এই ধারণা আরও বেশি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের সামনে টিকতে না পেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশসহ আশপাশের বিভিন্ন দেশে পালাতে শুরু করে।

বাংলাদেশ সরকারের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

প্রতি বছর নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে যখন সমুদ্র শান্ত হয়, তখন মিয়ানমারের নির্যাতিত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যরা কাঠের নৌকায় করে প্রতিবেশী থাইল্যান্ড এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পাড়ি জমিয়ে থাকে।

রয়টার্স বলছে, এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে ২০০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা পূর্ব আচেহ প্রদেশে পৌঁছায়। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তথ্যে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে ২ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছিল।

ইন্দোনেশিয়া ১৯৫১ সালের জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তবে দেশটিতে শরণার্থীরা পৌঁছালে তাদের আশ্রয় দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে।


আমার বার্তা/জেএইচ