এবার মার্কিন পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ চীনের
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:৪২ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ওয়াশিংটন আমদানিকৃত চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্প আরোপের কয়েক মিনিটের মধ্যে আমদানিকৃত মার্কিন পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্প আরোপ করেছে বেইজিং। মঙ্গলবার থেকে এই শুল্ক কার্যকরও করা হয়েছে।
গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের আগে থেকেই চীন, কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে আসছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ গ্রহণের পর তিনি ঘোষণা করেন, কানাডা এবং মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে।
পরে সোমবার শেষ মুহূর্তে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ এক মাসের জন্য স্থহিত করেন ট্রাম্প, কিন্তু চীনা পণ্যের ক্ষেত্রে তা জারি রাখেন। ফলে আন্তর্জাতিক সময় মঙ্গলবার রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত সব চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হয়ে যায়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বর্ধিত শুল্ক কার্যকর হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কয়লা ও এলএনজি গ্যসের ওপর অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেল, কৃষিকাজের যন্ত্রপাতি এবং গাড়ির ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক জারি করে বেইজিং।
এক বিবৃতিতে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেইজিং ইতোমধ্যে ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন গুগলের মালিক অ্যালফাবেটের বিরুদ্ধে একচেটিয়া ব্যবসার তদন্ত শুরু করেছে এবং কেলভিন ক্লেইন, বায়োটেকনোলজি কোম্পানি ইলুমিনাসহ বেশ কয়েকটি মার্কিন ব্র্যান্ডকে ‘সন্দেহভাজন ও অনির্ভরযোগ্য’ তালিকাভুক্ত করছে।
পৃথক এক বিবৃতিতে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন থেকে টাংস্টেন, টেলুরিয়াম, মলিবডেনাম, রুথেনিয়াম যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। এই মূল্যবান ধাতুগুলো যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে চীন।
এর আগে প্রথম মেয়াদে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প, সে সময় ২০১৮ সালে রীতিমতো ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ শুরু করেছিলেন ট্রাম্প। এ যুদ্ধের প্রধান কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার আমদানি-রপ্তানির ভারসাম্যহীনতা। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর শত শত কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে চীন, সেই তুলনায় চীনে মার্কিন পণ্য রপ্তানির হার বেশ কম।
সেবার চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্প অতিরিক্ত শুল্ক জারি করায় আন্তর্জাতিক সরবরাহ ব্যবস্থা ও বৈশ্বিক অর্থনীতির বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
এবারের শুল্ক আরোপের প্রধান কারণ ফেন্টানিল। হেরোইনের চেয়েও ৫০ গুণ শক্তিশালী এই মাদক বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং প্রতিদিন শতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। ফেন্টানিল তৈরির উপাদানগুলো আসে চীন থেকে।
ট্রাম্পের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রকে অভ্যন্তরীণভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য সেখানে ফেন্টানিল পাঠাচ্ছে চীন। সোমবার তিনি বলেছেন, “চীন যদি যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল পাঠানো বন্ধ না করে, তাহলে ভবিষ্যতে দেশটির রপ্তানি পণ্যের ওপর আরও বেশি শুল্ক ধার্য করা হবে।”
জবাবে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফেন্টানিল যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যা এবং এ নিয়ে চীনের কিছু বলার বা করার নেই। এছাড়া ট্রাম্পের এই শুল্কজারির বিরুদ্ধ জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে বেইজিং। -- সূত্র : রয়টার্স
আমার বার্তা/এমই