কাশ্মীরিদের ওপর ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়ন অব্যাহত

গ্রেপ্তার ২ হাজারেরও বেশি

প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:০৪ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর ভারতীয় বাহিনী দুই হাজারেরও বেশি কাশ্মীরিকে গ্রেপ্তার করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ধ্বংস করে দিয়েছে। শ্রীনগর, গান্ডেরবাল, বান্দিপোরা, কুপওয়ারা, বারামুলা, বদগাম, ইসলামাবাদ, পুলওয়ামা, শোপিয়ান এবং কুলগাম সহ একাধিক জেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে কাশ্মীর মিডিয়া সার্ভিস জানিয়েছে।

শুধু অধিকৃত কাশ্মীরের ইসলামাবাদ জেলাতেই ঘেরাও ও তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ১৭৫ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আটকদের থানা ও সেনা ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়েছে।

পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি তল্লাশি ও তল্লাশি অভিযানের সময় ১৭৫ জনকে আটক করা হয়েছে, অতিরিক্ত চেকপয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে এবং টহল জোরদার করা হয়েছে, বিশেষ করে ঘন বনাঞ্চলে। দুই হাজারের বেশি মানুষকে তুলে নিয়ে পুলিশ স্টেশন ও সেনা ক্যাম্পে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিলের হামলার পর ভারতীয় সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী উপত্যকা জুড়ে অভিযান জোরদার করে, ব্যাপক বাড়িতে অভিযান চালায় এবং নির্বিচারে গ্রেপ্তার করে।

ভারতীয় বাহিনী স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরিদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযানও শুরু করেছে। কাশ্মীর মিডিয়া সার্ভিস জানিয়েছে, শনিবার থেকে ভারতীয় বাহিনী বিস্ফোরক ব্যবহার করে সাত কাশ্মীরির পৈতৃক বাড়ি ধ্বংস করেছে। উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক আশপাশের বাড়িঘরেরও ব্যাপক ক্ষতি করেছে, কয়েক ডজন পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

অনেকেই কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে দখলদারিত্ব ও উচ্ছেদে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের এমন পদক্ষেপকে ইসরায়েলি কৌশল হিসেবে মনে করছেন।

অল পার্টিজ হুরিয়ত কনফারেন্সের (এপিএইচসি) মুখপাত্র আবদুল রশিদ মিনহাস শ্রীনগরে জারি করা এক বিবৃতিতে বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া ও গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছেন।

এদিকে এই অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতি। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ তিনি লিখেছেন, পহেলগাঁওয়ে হামলার পর ভারত সরকারকে সন্ত্রাসী ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে পার্থক্য করতে হবে। নিরীহ মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে তোলা উচিত নয়। ’

অন্যদিকে কাশ্মীরের আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, পহেলগাঁওয়ের হামলার পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই অনিবার্য। দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত, তবে নিরীহ মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে। এখন জনগণের সমর্থনকে শক্তিশালী করার সময়। ’

উল্লেখ্য, নিরাপত্তা বাহিনী এখনও অভিযানের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। আটক ব্যক্তিদের সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।


আমার বার্তা/এমই