মার্কিন পণ্যের কমবে শুল্ক, বাড়বে আমদানি
প্রকাশ : ১৩ মে ২০২৫, ১১:৩৮ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

ইউএসটিআর বাংলাদেশকে পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই ব্র্যান্ড পণ্য আমদানি করার। যেমন—জেনারেল মোটরসের গাড়ি বা এলজির পণ্য—যা সাধারণত অন্য দেশ থেকে আনা হয়। এছাড়া উড়োজাহাজ ক্রয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িংকে অগ্রাধিকার দেবে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে দেশটি থেকে আমদানি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক হ্রাসের পাশাপাশি আমদানি বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।
সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন করে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এক প্রাথমিক নথি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও কিছু পণ্য আমদানির সুযোগ রয়েছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সারা বিশ্ব থেকে ২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারের তুলা আমদানি করেছে, যার মধ্যে ৩৩৬ দশমিক ৫২ মিলিয়ন ডলারের তুলা এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। বিশ্ববাজারে তুলা রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ ছিল ৩৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। বাংলাদেশে মার্কিন তুলার ওপর কোনো শুল্ক নেই।
তবে এলপিজির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান তুলনামূলকভাবে কম। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের এলপিজি আমদানি করলেও এর মাত্র ৫১ দশমিক ৩২ মিলিয়ন ডলার এসেছিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে। দেশটি ওই বছর ২০ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলারের এলপিজি রপ্তানি করেছিল।
সূত্র জানায়, সয়াবিন, গম, প্রাকৃতিক গ্যাস, ভুট্টা, স্বর্ণ, ভ্যাকসিন, বোর্ড, প্যানেল, জুয়েলারিসহ বেশ কিছু মার্কিন পণ্যের আমদানি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। একইসঙ্গে যেসব পণ্য যুক্তরাষ্ট্র প্রচুর রপ্তানি করে, সেসব পণ্য আমদানির বিষয়েও বাংলাদেশ প্রস্তাব দেবে।
বর্তমানে তুলা, ফেরোয়াস বর্জ্য ও স্ক্র্যাপ, প্রাকৃতিক গ্যাস, গম, তেল, দুধ ও ক্রিমসহ অল্প কিছু পণ্যই যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে বাংলাদেশ।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, ‘আমরা এখনো নথিটি হাতে পাইনি। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জন্য আমাদের জবাব প্রস্তুত করছি। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে সেটি মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কাছে পাঠানো হবে।’
তিনি আরও জানান, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার 'মোস্ট ফেভারড নেশন' (এমএফএন) নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ শুল্ক কাঠামো যৌক্তিক করবে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া শুল্ক হার অন্যান্য দেশেও প্রযোজ্য হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ১০০টি পণ্য শনাক্তে কাজ করছে, যেগুলোর ওপর বাংলাদেশ শুল্ক ছাড় দিতে পারে। এছাড়া, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধ করেছে। ওরাকলের পাওনাও শিগগির পরিশোধ করা হবে। ব্যবসার পরিবেশ সহজ করতে বাংলাদেশ অশুল্ক বাধা কমানো এবং অফিসে নকল সফটওয়্যার ব্যবহারে বিরত থাকার প্রতিশ্রুতিও দেবে।
এদিকে, গত ৭ মে ইউএসটিআরের পক্ষ থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা এস কে বশির উদ্দিনকে পাঠানো চিঠিতে শ্রম অধিকার রক্ষার আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ডিজিটাল বাণিজ্যে কোনো প্রতিবন্ধকতা না রাখতে ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে ইউএসটিআরের দূত জেমিসন গ্রেয়ার বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষি ও শিল্প পণ্যের ওপর শুল্ক ও অশুল্ক বাধা কমানো এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে আমরা প্রস্তুত।’
আমার বার্তা/এল/এমই