ভারতে ‘ডাইনি চর্চার’ অভিযোগে একই পরিবারের ৫ জনকে হত্যা

প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৫, ১০:৫১ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

ভারতের বিহার রাজ্যে ডাইনি বিদ্যা চর্চার অভিযোগ তুলে একই পরিবারের পাঁচজনকে বেধড়ক পিটিয়ে এবং পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সোমবার সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যায় পূর্ব বিহারের পূর্ণিয়া জেলার মুফাসিল থানার একটি প্রত্যন্ত তেতগামা গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
 
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতরা হলেন বাবু লাল ওরাওঁ (৫০), তার মা কান্তো দেবী (৭০), স্ত্রী সীতা দেবী (৪৫), ছেলে মনজিত কুমার (২৫) এবং পুত্রবধূ রাণী দেবী (২২)।
 
পূর্ণিয়া সদরের সাবডিভিশনাল পুলিশ অফিসার (এসডিপিও) পঙ্কজ কুমার শর্মা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এই হত্যার সঙ্গে ঝাঁড়-ফুক, ডাইনিবিদ্যা-এই সবের যোগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। নিহতদের পরিবার ঝাড়-ফুঁক করত বলে জানা যাচ্ছে।
 
তিনি আরও বলেন, ওই পরিবারের এক কিশোর সদস্য জানিয়েছে, ডাইনিবিদ্যা অনুশীলনের অভিযোগ তুলে তার বাড়ির পাঁচজনকে মারধর করে জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
 
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, বাবু লালের ১৬ বছর বয়সি ছোট ছেলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। হত্যার ঘটনায় পুরো গ্রামবাসী জড়িত ছিল বলে বেঁচে যাওয়া কিশোর পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন।
 
এসডিপিও শর্মা আরও বলেন, ‘চারজনের নাম এফআইআরে রয়েছে। আমরা তিনজনকে গ্রেফতার করেছি। তবে আমাদের ধারণা, পুরো গ্রামই এই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে।’
 
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল ‘ঝাড়ফুঁক’ বা লোকজ চিকিৎসা নিয়ে বিরোধ থেকে। নিহত বাবুলাল ওরাঁও এমন চিকিৎসার চর্চা করতেন। কয়েকদিন আগে গ্রামের রামদেব ওরাঁওয়ের পরিবারের এক শিশু মারা যায় এবং অপর একজন গুরুতর অসুস্থ হয়। এরপরই বাবুলালের পরিবারের বিরুদ্ধে ‘ডাইনি বিদ্যা’র অভিযোগ তুলে এই হামলা চালানো হয়।
 
ঘটনার পর বিহারের বিরোধীদলীয় নেতা ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এক্সে লেখেন, ‘পূর্ণিয়ায় একই পরিবারের পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিহারে আইনশৃঙ্খলা একেবারে ভেঙে পড়েছে। সরকার কেউ দায় নিচ্ছে না।
 
বিহার কংগ্রেস সভাপতি রাজেশ কুমার বলেন, বিহারে গরিব, দলিত ও প্রান্তিক জনগণের কেউই নিরাপদ নয়। এই ঘটনা প্রমাণ করে ‘জঙ্গলরাজ’ চলছে।


আমার বার্তা/এল/এমই