এশিয়ার জিডিপি ১.৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে আঞ্চলিক সহযোগিতা

আইএমএফ প্রধান

প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৭ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

আইএমএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা/সংগৃহীত

এশিয়ার মধ্যে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সহযোগিতা বাড়ানো গেলে দীর্ঘমেয়াদে জিডিপি ১ দশমিক ৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হতে যাওয়া সংস্থাটির বার্ষিক সাধারণ সভার আগে এক লিখিত বক্তব্যে জর্জিয়েভা এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘এশীয় দেশগুলোর উচিত চূড়ান্ত পণ্য ও সেবা খাতে বাণিজ্য বাড়ানো। সেবা খাত ও আর্থিক খাতে প্রবেশাধিকার জোরদারে সংস্কার এগিয়ে নেওয়া। বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তার মধ্যে টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এশিয়ার অভ্যন্তরীণ সংযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’

আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘যখন আমি বিগত কয়েক দশকে বিশ্বের দিকে তাকাই, আমি একদিকে দেখি অভূতপূর্ব অগ্রগতি, অন্যদিকে অপূর্ণ স্বপ্ন। গড়পড়তা মানুষ আজ থেকে ৩০ বছর আগের তুলনায় অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু এই গড়পড়তা উন্নতির পেছনে লুকিয়ে আছে বঞ্চনা, অসন্তোষ ও কঠিন বাস্তবতার গভীর স্রোত।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক জায়গায়, অনেক মানুষ—বিশেষ করে তরুণরা তাদের হতাশা প্রকাশ করছে রাস্তায় নেমে। লিমা থেকে রাবাত, প্যারিস থেকে নাইরোবি এবং কাঠমান্ডু থেকে জাকার্তা—সব জায়গায়ই তারা আরও ভালো সুযোগের দাবি জানাচ্ছে।’

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বার্ষিক সাধারণ সভা শুরু হবে। সভায় বিশ্ব অর্থনৈতিক পূর্বাভাস ব্যাখ্যা করা হবে। বলা হচ্ছে যে, চলতি বছর এবং আগামী বছর বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিছুটা নিম্নমুখী বা ধীরগতির থাকতে পারে। বিভিন্ন ধাক্কা ও সংকটের মুখেও বৈশ্বিক অর্থনীতি সাধারণভাবে স্থিতিশীল রয়েছে—এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে সব তথ্য-উপাত্ত।

জর্জিয়েভা বলেন, ‘স্থিতিশীলতার পেছনে আমি চারটি প্রধান কারণের দিকে ইঙ্গিত করবো- নীতিগত ভিত্তির উন্নয়ন; বেসরকারি খাতের অভিযোজন ক্ষমতা; আশঙ্কার তুলনায় কম মাত্রার শুল্কপ্রভাব—যদিও তা আপাতত এবং সহায়ক আর্থিক পরিবেশ, যতদিন তা বজায় থাকে।’

আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘এই জটিল ও অনিশ্চিত বিশ্বে যদি আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে আমরা এমন নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে পারি, যা বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ, দৃঢ় প্রতিষ্ঠান, নির্ভরযোগ্য তথ্য ও শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তা জালের মাধ্যমে মুক্তবাজার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে।’

বক্তৃতাস্থলের একটি লেখা ইঙ্গিত করে বলেন, ‘একটি স্বপ্ন তুমি একা দেখলে, সেটা কেবল একটি স্বপ্নই থাকে। কিন্তু যখন আমরা একসঙ্গে স্বপ্ন দেখি, তখন তা বাস্তবতা হয়ে ওঠে।’

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য আইএমএফের প্রস্তাব

প্রথমত, টেকসইভাবে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করা, যাতে অর্থনীতি আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে, সরকার আরও রাজস্ব আদায় করতে পারে এবং সরকারি-বেসরকারি ঋণ আরও টেকসই হতে পারে।

দ্বিতীয়ত, সরকারের আর্থিক অবস্থার পুনঃস্থাপন, যাতে তারা ভবিষ্যতের নতুন ধাক্কাগুলোর মোকাবিলা করতে পারে এবং জরুরি প্রয়োজন পূরণ করতে পারে, সেটা আবার বেসরকারি খাতে ঋণের সুদের হার বাড়িয়ে না দিয়ে।

তৃতীয়ত, অতিরিক্ত ভারসাম্যহীনতা (অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্ব উভয় ক্ষেত্রে) দূর করা, যাতে এগুলো ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা না দেয়।


আমার বার্তা/এমই