যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না জোহরান মামদানি, সংবিধানই মূল বাধা
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০১ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে অভূতপূর্ব জয় পেয়ে মার্কিন রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন জোহরান মামদানি। তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি এখন পরিবর্তনের প্রতীক— আত্মবিশ্বাসী, উদারপন্থী ও স্পষ্টভাষী এক নেতা। তবে যত জনপ্রিয়তাই অর্জন করুন না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ, মার্কিন সংবিধানই সেটি নিষিদ্ধ করেছে।
মার্কিন সংবিধানের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ, প্রথম ধারা অনুযায়ী বলা হয়েছে- 'স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণকারী নাগরিক ব্যতীত অন্য কেউ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য যোগ্য হবেন না।'
এই ধারা অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হতে হলে জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক হতে হবে— অর্থাৎ জন্মের সময়ই নাগরিকত্ব থাকতে হবে, তা যুক্তরাষ্ট্রে হোক বা বিদেশে জন্ম নেওয়া মার্কিন পিতামাতার সন্তান হিসেবে।
কিন্তু জোহরান মামদানি জন্মেছেন ১৯৯১ সালে উগান্ডার কাম্পালায়, ভারতীয়–উগান্ডান পরিবারের ঘরে। তিনি সাত বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং ২০১৮ সালে নাগরিকত্ব অর্জন করেন। ফলে জন্মসূত্রে নয়, বরং স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়ায় তিনি মার্কিন নাগরিক— যা তাঁকে সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট পদে অযোগ্য করে তোলে।
মামদানি ডেমোক্রেটিক পার্টির উদীয়মান নেতা হিসেবে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা তাঁকে ভবিষ্যতের জাতীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে দেখছেন। তবে 'জন্মসূত্রে নাগরিক' না হওয়ায় তিনি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না— যেমন পারবেন না ইলন মাস্ক বা আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারও।
ক্যালিফোর্নিয়ার সাবেক গভর্নর শোয়ার্জনেগার একসময় জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করতে চাইলেও একই কারণে থেমে গিয়েছিলেন।
তত্ত্বগতভাবে এই বিধান পরিবর্তন সম্ভব হলেও, বাস্তবে তা প্রায় অসম্ভব। ২০০৩ সালে সিনেটর অরিন হ্যাচ 'ইক্যুয়াল অপরচুনিটি টু গভার্ন অ্যামেন্ডমেন্ট' নামে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন— যাতে বিদেশে জন্ম নেওয়া নাগরিকদেরও প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেটি ব্যর্থ হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতারা এই শর্ত আরোপ করেছিলেন বিদেশি প্রভাব রোধের উদ্দেশ্যে। দুই শতাব্দীরও বেশি সময় পরে আজও সেই নীতি অপরিবর্তিত রয়েছে। আইন পরিবর্তন করতে হলে কংগ্রেসের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন ও ৫০টি অঙ্গরাজ্যের তিন-চতুর্থাংশের অনুমোদন প্রয়োজন— যা বাস্তবে প্রায় অসম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
আমার বার্তা/জেএইচ
