রাষ্ট্রপতি অপসারণ সাংবিধানিক প্রশ্ন নয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত

প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:১৯ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

শেখ হাসিনার পদত্যাগ পত্র ইস্যুতে বিতর্ক ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে- এ নিয়েই এখন তীব্র কৌতূহল বিরাজ করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ও বিভিন্ন অঙ্গনে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রপতি তার পদে থাকবেন কি থাকবেন না এটি সাংবিধানিক প্রশ্ন নয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।

নাহিদ বলেন, জনগণের চাওয়া বুঝতে পেরেছে সরকার। সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।  রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। তাই যৌক্তিক সিদ্ধান্ত আসতে সময় লাগছে। বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ না করারও পরামর্শ দেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, আমরা সবাই জানি একটি গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের সমর্থনে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সেই সময় বিদ্যমান যে সংবিধান এবং রাষ্ট্রপতিকে রেখেই সরকার গঠন করেছিলাম। কিন্তু যদি আমাদের মনে হয় এই সেটআপে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে অথবা জনগণ এই সেটআপে অসন্তুষ্ট, তাহলে এ বিষয় নিয়ে আমরা ভাববো এবং পুনর্মূল্যায়ন করছি।

‘রাষ্ট্রপতি থাকবেন কি থাকবেন না এ প্রশ্নটি এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আইনি বা সাংবিধানিক প্রশ্ন নয়। এটি একেবারেই একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। ফলে রাজনৈতিক সমঝোতা এবং জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে এই বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি। আলোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্ত হয়ত আসবে।’

তিনি বলেন, ‘তবে এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা। এটি আমাদের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রায়োরিটি। আমরা জনগণের প্রতি আহ্বান রাখছি যাতে সচেতন থাকি, শান্ত থাকি। কোনো ধরনের সুবিধাভোগী গোষ্ঠী বা নানা ধরনের যে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্র চলছে, এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হয় যাতে তারা সুবিধা নিতে পারে। সে বিষয়ে আমাদের সবাই সচেতন থাকতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এ বিষয়টা নিয়ে এ কারণেই মনে করছি যে রাজনৈতিক আলোচনা এবং সমঝোতার মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। জনগণের যেকোনো যৌক্তিক দাবির প্রতি আমাদের সংহতি এবং সংবিধানশীলতা রয়েছে। তবে সবার প্রতি আহ্বান থাকবে আমরা এ বিষয়ে কোনো ধরনের অরাজক পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সে বিষয়ে সবাই সচেতন থাকি।’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে একটা আল্টিমেটাম দিয়েছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে একটা আলোচনা করছি। এ বিষয়ে কোনো নির্ধারিত সময় নেই। আমরা আলোচনা করছি। যখন আলোচনার মাধ্যমে আমরা একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্তে যেতে পারব, যেটা আমাদের রাষ্ট্র এবং জনগণের পক্ষে যাবে, সে সময় আমরা সিদ্ধান্ত নেব এবং সবাইকে জানিয়ে দেব।’

তিনি আরও বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি তারা মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্রসহ মিছিল করছে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রপাগান্ডা করছে। পাশাপাশি চাঁদাবাজ এবং সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। আমরা যাতে সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখি। ফ্যাসিবাদী শক্তি যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা যাতে ঐক্যবদ্ধভাবে একটা প্রতিরোধ তৈরি করি।

 

আমার বার্তা/এমই