উপকূল এক্সপেস বন্ধের বার্তা ছিল না, ইঞ্জিনসহ ৬ কোচ ক্ষতিগ্রস্ত

প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:৫১ | অনলাইন সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক:

আন্দোলন চলাকালে সম্প্রতি ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে ওই ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৬টি কোচ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। একই সঙ্গে ওই হামলায় আহত যাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে রেলওয়ে।

ঘটনার আগে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আন্দোলনের ব্যাপারে পূর্বাভাস পাওয়া যায়নি বলেও জানানো হয়। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. নাহিদ হাসান খাঁনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৮ নভেম্বর নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পার হয়ে মহাখালী লেভেল ক্রসিং গেট পার হচ্ছিল। এ সময় সরকারি তিতুমীর কলেজের আন্দোলনরত একদল শিক্ষার্থীর পাথর নিক্ষেপের শিকার হয়। এতে ট্রেনটির ইঞ্জিন নম্বর ৩০১৯, শোভন চেয়ার ১০১৯, ১০১৬, ৬২০৬, ৬২০৫ ও ৬৬০৫ কোচগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় আনুমানিক ১৫ যাত্রী গুরুতর আহত হন। আহত যাত্রীদের বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ওইদিন আনুমানিক বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে মহাখালী লেভেল ক্রসিং গেট আটকে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী হামলা করলে ঘটনাটি সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা কন্ট্রোল রুমে জানানো হয়। উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে আনুমানিক ১১টা ৩৭ মিনিটে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে মহাখালী লেভেল ক্রসিং গেটের দূরত্ব ৫ দশমিক ১ কিলোমিটার এবং তেজগাঁও স্টেশন থেকে দূরত্ব ২ কিলোমিটার।

বাংলাদেশ রেলওয়ের দাবি, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন এবং তেজগাঁও স্টেশনের কর্তব্যরত মাস্টারদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায় ঘটনার আগে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আন্দোলনের ব্যাপারে পূর্বাভাস পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ঘটনার সময় ওই গেটে কর্তব্যরত গেটম্যানকেও রেলপথ অবরোধ করে ব্যানার ফ্ল্যাগ দেখিয়ে ট্রেন থামানোর ব্যাপারে পূর্ব থেকে কিছু জানানো হয়নি।

রেলওয়ের পরিচালক জানান, নির্ধারিত গতিতে ছুটে চলা ট্রেনটি মহাখালী গেটে ঘন ঘন হুইসেল দিয়ে থেমে যায় এবং কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্মুহু পাথর নিক্ষেপের শিকার হয়। প্রায় ২ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর ট্রেনটি পুনরায় চলতে শুরু করে।

তিনি বলেন, তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থী ঐক্য ব্যানারে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে বরাবর রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন সংক্রান্ত কোনো স্মারকলিপি বা পূর্ব সতর্কবার্তা পাওয়া যায়নি। যার ফলে ট্রেনগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই চলাচল করেছিল।

রেলওয়ে আইন ১৮৯০ এর ১২৬ নং ধারা মোতাবেক যে কোনো উপায়ে রেলপথ অবরোধ করে রেলপথ কিংবা ট্রেন কিংবা ট্রেনে ভ্রমণকরা যাত্রীর ক্ষতিসাধন করা বা ক্ষতিসাধনের চেষ্টা দণ্ডনীয় অপরাধ। দুর্ঘটনা কিংবা রেলপথের ক্ষতিসাধন সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটার আগে সতর্কবার্তা না পাওয়া গেলে ট্রেন কার্যকরী সময়সূচি অনুযায়ী স্বাভাবিক নিয়মেই চলাচল করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, পূর্ব সতর্কবার্তা কিংবা কোনো প্রকার স্মারকলিপি বাংলাদেশ রেলওয়েকে না দিয়ে অতর্কিত রেলপথ অবরোধ করে ব্যানার ফ্ল্যাগ দেখিয়ে ট্রেন থামিয়ে ট্রেন ও ট্রেন যাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনার দায় বাংলাদেশ রেলওয়ের নয়। বরং কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কবার্তা ছাড়া যারা অতর্কিত এটা করেছেন তাদের এ দায়।


আমার বার্তা/এমই