গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের মালিকানা কমলো

প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৫৬ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

উপদেষ্টা পরিষদের সভায় গ্রামীণ ব্যাংক সংশোধন অধ্যাদেশ নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই অধ্যাদেশে সরকারের মালিকানা ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে এবং ৯০ শতাংশ রাখা হয়েছে ব্যাংকের সুবিধাভোগীর জন্য।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এর আগে এদিন সকালে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এখানে গ্রামীণ ব্যাংক আগে যখন কাজ করতো, একটা মূল্যবোধ নিয়ে কাজ করতো। সেই মূল্যবোধ হচ্ছে যারা গ্রামীণ ব্যাংকের সুবিধাভোগী, তাদেরই অংশগ্রহণ থাকবে ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদকে রাজনৈতিকভাবে টার্গেট করা হয়েছিল এবং গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানায় তার যে দর্শন ছিল- যে ঋণ নেবে তার হাতেই সুবিধা থাকবে। সেখান থেকে সরিয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশে নিয়ে আসা হয়। আজকে যে অধ্যাদেশ সংশোধন করা হলো, তার মাধ্যমে আগে গ্রামীণ ব্যাংক ভূমিহীনদের জন্য কাজ করতো, এখন বিত্তহীনদের একটা সংজ্ঞা সংযোজন করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পরিসর থেকে বেরিয়ে সিটি করপোরেশন, পৌরসভাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অধ্যাদেশে বোর্ডের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে- যারা এই ব্যাংকের সুবিধাভোগী, তাদের মধ্যে থেকে ৯ জন নির্বাচিত হয়ে আসবেন। এই ৯ জনের মধ্যে থেকে আবার ৩ জন মনোনীত হবেন এবং তাদের মধ্যে থেকে একজন চেয়ারম্যান নিযুক্ত হবেন। এখানে আরেকটি বিষয় হচ্ছে- পরিশোধিত মূলধন আগে ছিল সরকারের ২৫ শতাংশ, আর সুবিধাভোগীদের ৭৫ শতাংশ । এখন হয়ে গেছে ১০ শতাংশ এবং ৯০ শতাংশ। এ ছাড়া ‘ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট ২০১৫’ অনুসারে গ্রামীণ ব্যাংককে জনস্বার্থ সংস্থা হিসেবে বিবেচনা করার একটা বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমরা দেখেছি যে, একটা শিল্পগোষ্ঠী কীভাবে কয়েকটা ব্যাংকে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে, কত টাকা এ দেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই জিনিসটা ভবিষ্যতে যাতে না হতে পারে, সেই জন্য করপোরেট সেক্টরে, ব্যাংক সেক্টরের শৃঙ্খলা আনার জন্য, জবাবদিহির জন্য আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য, ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ আজকে আমরা অনুমোদন দিয়েছি। আমরা আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনায় আমাদের সাধারণ আমানতকারীদের আর পড়তে না হয়, সেজন্য এক্ষেত্রে শৃঙ্খলা কীভাবে আনা যায়— বাংলাদেশ ব্যাংককে কতটুকু ক্ষমতা দেওয়া হবে, সে কোন পর্যায় গিয়ে হস্তক্ষেপ করবে, এগুলো আইনে স্পষ্ট ছিল না। এখন এগুলো স্পষ্ট করা হলো।

তিনি বলেন, রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি কিন্তু জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের একটা সুপারিশ ছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই অধ্যাদেশ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছিলেন— রাজস্ব সংগ্রহ এবং রাজস্ব সংক্রান্ত নীতি করার জন্য দুটি আলাদা কর্তৃপক্ষ হবে। সেই মোতাবেক রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশে আমরা দুটি কাজকে আলাদা করছি।


আমার বার্তা/এমই