মব জাস্টিস সরকার কোনোভাবেই বরদাশত করে না: রিজওয়ানা হাসান
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৫, ১৬:৪২ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

সরকার কোনোভাবেই মব জাস্টিস বরদাশত করে না বলে স্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে সাভার উপজেলা পরিষদ মাঠে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সাভারে এক লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকার বারবার তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে, সরকার কোনোভাবেই মব জাস্টিস বরদাশত করে না। এখন এই ঘটনাগুলো ঘটেছে, কোনোভাবেই সরকার বা সরকারি দলের তো কোনো সম্পৃক্ততা নেই, যখনই মব জাস্টিস ঘটছে, অন্তত গত ৩-৪ মাস দেখতে পারেন, যেখানেই ঘটনা ঘটেছে, আসামি গ্রেফতার করেছি। কোনো আসামি আর বের হতে পারছে না।
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথম কথা, আমাদের সময়টা তো অল্প, এই অল্প সময়ে আমরা ঢাকা শহরের ২০ টা খাল এবং তুরাগ নদীটা করেছি। এগুলো আমরা অর্থ যোগাড় করেছি, কাজও শুরু হয়ে গেছে। তুরাগটা হয়তো কাজ শুরু হয়ে যাবে, আশা করি বেশি দেরি হলেও ফেব্রুয়ারিতে। আর বাকি জায়গার যেগুলো খাল, যেমন- বুড়িগঙ্গা দখলমুক্ত করা যায়নি।
অবৈধ ইটভাটা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমরা যেগুলো অবৈধ তার বিরুদ্ধে এইবার জোরালো অভিযান হয়েছে কিনা সেটা বলেন। হয়েছে সাভারে? প্রচুর পরিমাণ ইটভাটা ভাঙা হয়েছে কি হয় নাই সাভারে। এর আগে এত পরিমাণ অবৈধ ইটভাটা ভাঙা হয়েছে নাকি হয় নাই? এখন আড়াই বছরের খতিয়ান আমি দিতে পারবো না। আমি ১১ মাসেরটুকু বলতে পারি। ১১ মাসে সামর্থ্য অনুযায়ী যতটুকু করার, তার অনেক বাইরে গিয়ে করেছি।
সাভার ট্যানারির পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, সাভার ট্যানারির বিষয় অবশ্যই আমার মন্ত্রনালয়ের বিষয়। তবে এটা আসলে ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে আইডেন্টিফাই করে দেওয়া হয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়কে। আর শিল্প মন্ত্রণালয় বিসিকের মাধ্যমে সিইটিপি চালাতে গিয়ে দেখেছে, নানান সংস্কার, নানা সীমাবদ্ধতার কারণে সিইটিপি কার্যকর করা হয়নি। সেইজন্য এই সিইটিপিকে বিসিকের হাত থেকে সরিয়ে নিয়ে নতুন করে সিইটিপি করা ছাড়া নতুন কোনো গন্তব্য নাই। সেটা শিল্প মন্ত্রণালয় আপনাদের ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবে। আমার পক্ষ থেকে আমি যেটা করতে পারি সেটা আমি করেছি। সেটা হলো, এই কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটা ফ্লোরিং করে, একটা আবদ্ধ জায়গায় রাখা যায় ও ব্যবস্থাপনা করা যায়, এইটুকু ব্যবস্থা আমরা শিল্প মন্ত্রণালয়কে দিয়েছি।
পরিবেশ অধিদফতরের অভিযানের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, অনেক জায়গায় পরিবেশ অধিদফতর নানা অনিয়মের কারণে ব্যবস্থা নেয় না। কিন্তু কোনো কোনো জায়গায় কাজ করতে গিয়ে দেখি আমি লোক পাঠাবার জন্য লোক পাই না। লোকই আছে দেখা যায় মাত্র ৪ জন। কোনো ক্ষেত্রে সমন্বয় করে কাজ করতে হয়। এই ধরেন জুলাই আগস্ট সেপ্টেম্বরে কারখানার বিষয় নিয়ে শুরু হবে। আবার ডিসেম্বরে শুরু হবে ইটভাটা নিয়ে।
এর আগে, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুবকর সরকার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারশ সরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ রক্ষায় একদিনে সাভারে এক লাখ বৃক্ষ রোপনের কর্মসূচি গ্রহণে প্রশাসনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বুড়িগঙ্গা রক্ষায় উদ্যোগ নিলেও সাহস করে অনেকেই এগিয়ে আসেন না।
উপদেষ্টা আরও বলেন, সাভারের আমিনবাজার ও মাতুয়াইলে সিটি কর্পোরেশনের ল্যান্ডফিল থেকে আবর্জনা পুরানো বন্ধ না হলে কখনোই ঢাকার বাতাস দূষণমুক্ত থাকবে না বরং দিন দিন তা বাড়তেই থাকবে। বৃক্ষরাজি কম থাকায় উষ্ণতা বেড়েছে। পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপনের কোন বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পরে তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের চারা তুলে দেন। উপজেলা চত্বরে একটি গাছের চারা রোপন করে এর উদ্ভোধন ও করেন।
আমার বার্তা/এমই