শ্রম আইনে সংশোধনী আসছে, শ্রমিকদের ব্ল্যাকলিস্টিং করা যাবে না

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩৬ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

সংশোধিত শ্রম আইনে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য ন্যূনতম আবেদনকারীর সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত বিষয়ে শতকরা হারের পরিবর্তে সংখ্যাভিত্তিক ন্যূনতম আবেদনকারীর বিষয়ে সন্নিবেশিত হচ্ছে। এছাড়াও শ্রমিকদের ব্ল্যাকলিস্টিং নিষিদ্ধকরণ ও ব্ল্যাকলিস্টিং করণে শাস্তির বিধান সংযোজন করা হবে।

বাংলাদেশে সফররত যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলকে এ তথ্য জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।


রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) অ্যাসিস্ট্যান্ট ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার) ব্রেন্ডান লিঞ্চ এবং অফিস ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ডিরেক্টর (দক্ষিণ এশিয়া ) ইমিলি অ্যাসবি’র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসব তথ্য জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা।

সচিবালয়ে উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ সাক্ষাতে শ্রমখাতের বিভিন্ন ইস্যুতে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিনিময় হয়। বাংলাদেশের শ্রম খাতের উন্নয়ন, ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন সহজীকরণ, শ্রম অধিকারে যুক্তরাষ্ট্রের ১১ দফা বাস্তবায়ন এবং বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।

উপদেষ্টা বলেন, শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধনে শ্রম অধিকার সম্পর্কিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১ দফার আলোকে গৃহীত পদক্ষেপ, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার রোডম্যাপ, শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও ইউরোপীয় অ্যাকশন প্ল্যানে অন্তর্ভুক্তির অনেক বিষয়ে আইনি বিধান সন্নিবেশিত করা হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক শ্রমমান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অধিকতর সংশোধনী আনায়ন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে শিশুশ্রম বন্ধে আইএলও কনভেনশন ১৩৮ ও ১৮২ অনুস্বাক্ষর করেছে। পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইএলও কনভেনশন সি১৫৫, সি১৮৭ এবং কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি বন্ধে সি১৯০ অনুস্বাক্ষর করা হবে। এই ৩টি কনভেনশন অনুস্বাক্ষর হলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে আইএলও’র ১০টি ফান্ডামেন্টাল কনভেনশন অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হবে।

শ্রম আইন সংশোধনে ট্রেডইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন ইউএস প্রতিনিধিদলের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য ন্যূনতম আবেদনকারীর সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত বিষয়ে শতকরা হারের পরিবর্তে সংখ্যাভিত্তিক ন্যূনতম আবেদনকারীর বিষয়ে সন্নিবেশিত হচ্ছে। এছাড়াও শ্রমিকদের ব্ল্যাকলিস্টিং নিষিদ্ধকরণ ও ব্ল্যাকলিস্টিংকরণে শাস্তির বিধান সংযোজন করা হবে।

তিনি শ্রমিক অধিকার রক্ষা, শোভন কর্মপরিবেশ ও পেশাগত স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। এ সময় উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ক্রেতা ব্র্যান্ডগুলোর কাছে বাংলাদেশি পণ্যের জন্য প্রত্যাশিত ন্যায্য মূল্য (ফেয়ার প্রাইজ) নিশ্চিত করার জোরালো অনুরোধ জানান।

ব্রেন্ডান লিঞ্চ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও শ্রমখাতের অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী শ্রম আইন সংশোধনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

উভয়পক্ষই শ্রমখাতে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও বাড়াতে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নতুন সুযোগ বৃদ্ধির ওপর জোরদার করেন।

এ সময় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অমল কৃষ্ণ মণ্ডল ও মো. হুমায়ুন কবীরসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন এবং শ্রমবিষয়ক অ্যাটাসে লিনা খান উপস্থিত ছিলেন।


আমার বার্তা/জেএইচ