বাংলাদেশ-কুয়েত শ্রম সহযোগিতাসহ বিভিন্ন খাতে শিগগির নতুন চুক্তি

প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৫৫ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

শ্রম সহযোগিতাসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে শিগগির নতুন চুক্তি হবে বলে জানিয়েছেন কুয়েতের এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত সামি ঈসা জোহর হায়াত।

রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব কথা জানান তিনি।

এদিন বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের রাজনৈতিক পরামর্শ বৈঠক বা ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বেলা সাড়ে ১১ টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দুই দেশের মধ্যকার এফওসিতে কুয়েতের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সামি ঈসা জোহর হায়াত। বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব ও পশ্চিম) ড. মো. নজরুল ইসলাম।

দুই দেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার ও বহুমাত্রিক সহযোগিতায় রূপ দিতে বৈঠকে নানা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে উভয়পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত সামি ঈসা জোহর হায়াত।

তিনি বলেন, কুয়েত ও বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৭৩ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়, আর এই প্রথম আমরা দুই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক পরামর্শ সভা করলাম। বৈঠকটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা আমাদের যৌথ এজেন্ডার নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন, বৈঠকে খাদ্য নিরাপত্তা, সাইবার নিরাপত্তা, শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময় কর্মসূচি, সামরিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের কর্মসংস্থান- এসব খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সামি ঈসা জোহর হায়াত বলেন, আমরা এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণে একমত হয়েছি এবং শিগগির একাধিক নতুন চুক্তি স্বাক্ষর হবে।

এই রাষ্ট্রদূত আরও জানান, সকালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধানসহ বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ আলির একটি চিঠি হস্তান্তর করেন।

উক্ত চিঠিতে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি।

কুয়েতের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আবারও ১৯৯০ সালের কুয়েতের দখলদারত্বের সময় বাংলাদেশের অকুণ্ঠ সমর্থনের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। তখন থেকে পাঁচ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি সেনা আমাদের পাশে থেকে মাইন অপসারণ ও মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, কুয়েত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক একদিন বা এক বছরের নয়, এটি ৩৬ বছরের অবিচ্ছিন্ন সহযোগিতার ফল, যা আমরা ভবিষ্যতে আরও প্রসারিত করবো।

বৈঠকে বেসামরিক বিমান চলাচল ও ফ্লাইট বৃদ্ধি নিয়েও আলোচনা হয় বলেও জানান কুয়েতের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বর্তমানে কুয়েত এয়ারওয়েজ সপ্তাহে সাতটি, আল জাজিরা এয়ারওয়েজ ১৪টি এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

'আমরা বাংলাদেশে আরও নতুন রুট ও ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছি, যা খুব শিগগিরই বাস্তবায়িত হবে,' বলেন তিনি।

তিনি আরও জানান, শ্রম সহযোগিতা নবায়নের বিষয়ে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি চলছে, যা আগামী উচ্চপর্যায়ের সফরকালে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে এ পর্যায়ের বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হলেও এবারই প্রথম এফওসি অনুষ্ঠিত হলো। দুই দেশ ভবিষ্যতে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে এসব আলোচনাকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছে।


আমার বার্তা/এমই