বিশ্বমানের জনশক্তি গড়তে জাতীয় লজিস্টিকস নীতি, গেজেট জারি

প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৫৭ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

লজিস্টিক্স খাতে বিশ্বমানের দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে সরকার ‘জাতীয় লজিস্টিকস নীতি-২০২৫’- এর গেজেট জারি করেছে।বুধবার (১৯ নভেম্বর) এ গেজেট জারি করা হয়েছে।

‘জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি, ২০২৫’ -এর ভূমিকায় বলা হয়, লজিস্টিক্স একটি গতিশীল ও সৃজনশীল খাত, যা প্রতিযোগিতাপূর্ণ বৈশ্বিক ব্যবস্থায় সক্ষমতা ও উন্নয়নের অপরিহার্য অংশ হিসেবে বিবেচিত। একটি দেশের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পণ্য ও সেবা সরবরাহ ব্যবস্থার মেরুদণ্ড হিসেবে এ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের বর্তমান শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে। এই বাড়তি খরচ সমন্বয়সহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সার্বিকভাবে বাণিজ্য সক্ষমতা বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ। এ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি, ২০২৫ প্রবর্তন করা হলো।

এতে আরও বলা হয়, এ নীতির আলোকে লজিস্টিক্স খাত এবং উপখাত সংক্রান্ত সব কার্যক্রম ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ বিকাশ এবং সাপ্লাই চেইনের সব ধাপে গুণগতমান বৃদ্ধি ও লজিস্টিক্স খাতে বিশ্বমানের দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলায় এ নীতি সহায়ক হবে। লজিস্টিক্স সেবার উপখাতগুলোর বিকাশ, উপখাতভিত্তিক সুনির্দিষ্ট নীতি ও কৌশল প্রণয়ন এবং সমন্বিত ও পরিমাপযোগ্য কর্মসম্পাদন সূচক প্রবর্তন ও বাস্তবায়নে এ নীতি দিকনির্দেশনা দেবে।

এর আগে গত ৫ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ৪৭তম বৈঠকে এই নীতি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, একটা নীতিমালা থাকলে সরকার তার কাজগুলো ঠিকভাবে করতে পারে, একটা নির্দেশনা পায়। এই নীতিমালাটি লজিস্টিক খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিকনির্দেশনা।

তিনি বলেন, এই নীতিমালার ফলে বাংলাদেশের বেসরকারি ও সরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে। বিদেশি বিনিয়োগ আসবে এবং বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের তুলনায় আরও বৃদ্ধি পাবে।

প্রেস সচিব জানান, বর্তমানে দেশের প্রধান নৌবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো কোনো সময় পণ্য রপ্তানিতে ১১ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। এই লজিস্টিকস নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে পারলে পণ্য পরিবহন ও প্রাপ্যতা অনেক দ্রুত হবে এবং রপ্তানি কার্যক্রম আরো সহজ হবে।

তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালে এ ধরনের একটি নীতি করা হয়েছিল। পরে তা পুনর্মূল্যায়ন করে দেখা যায়, সেটি প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। পরবর্তী সময়ে জনপ্রশাসন সচিব এহসানুল হকের নেতৃত্বে একটি কমিটি নতুনভাবে খসড়া প্রণয়ন করে।

নীতিমালার মূল লক্ষ্য সম্পর্কে প্রেস সচিব বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে লজিস্টিক খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে রেলওয়ে ও নৌপরিবহন খাতে। দেশের প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার নৌপথ রয়েছে, যার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।

তিনি জানান, নীতিমালায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) মডেলে বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে লজিস্টিক খাতকে একটি ডিজিটাল ইকোসিস্টেমে আনা হবে, যেখানে শুল্ক, ফি ও কাগজপত্রসহ সব কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।


আমার বার্তা/এমই