ওয়াশিংটনের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে নতুন চমক

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ

  রায়হান আহমেদ তপাদার:

প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিস ও হিলারি ক্লিনটনের মধ্যে অনেক তফাত আছে। তবে নির্বাচনী বয়ানের দিক থেকে যে তাঁদের মধ্যে খুব পার্থক্য আছে, তা স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে। ২০০৮ সালে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারির সময় হিলারি প্রচারণা চালানোর সময় নারী-পুরুষের মাঝখানে একটি কাচের দেয়াল তোলা আছে বলে বারবার উল্লেখ করেছিলেন। তিনি তাঁকে নির্বাচিত করার মধ্য দিয়ে সেই বৈষম্যের দেয়াল ভেঙে ফেলার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।প্রাইমারিতে তিনি ১ কোটি ৮০ লাখ ভোট পেয়েও শেষ পর্যন্ত ওবামার কাছে হেরে গিয়েছিলেন। ওই হারের পর হিলারি কাচের দেয়ালে ১ কোটি ৮০ লাখ আঁচড় পড়েছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। এরপর ২০১৬ ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার পর হিলারি বলেছিলেন, ‘আমরা কাচের দেয়ালে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় ফাটল ধরিয়ে দিতে পেরেছি।’ তবে শেষ পর্যন্ত হিলারি সেই কাচের দেয়াল ভেঙে ফেলতে পারেননি। অর্থাৎ নারী ইস্যুতে তিনি সফল হতে পারেননি। কারণ, তাঁকে পরাজয়ের খবর শুনতে হয়েছিল। লক্ষ করার বিষয় হলো, কমলা এখন পর্যন্ত একবারও হিলারির সেই কাচের দেয়াল ভাঙা নিয়ে কোনো কথা বলেননি। অর্থাৎ তিনি তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় নারীবাদকে সামনে আনেননি। আসলে চিত্রকল্প হিসেবে কাচের দেয়ালটি খুব দ্রুত সেকেলে হয়ে গেছে। এমনকি হিলারির সময়ই তা অর্থ হারিয়ে ফেলেছিল। হয়তো সে কারণেই কমলা একজন হেরে যাওয়া নারী প্রার্থীর কোনো নির্বাচনী অনুষঙ্গ বা কোনো প্রতীকী বিষয়ের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে চান না। মনে হচ্ছে কমলার প্রচারণার ধরনকে ডেমোক্রেটিক পার্টি অধিকতর সূক্ষ্মভাবে পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমলা জয়ী হলে তিনি যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হবেন, তা নয়। জয়ী হলে তিনি হবেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী প্রেসিডেন্ট; দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত প্রথম প্রেসিডেন্ট। এই সত্য উল্লেখ করা প্রচারণার একটি প্রধান অলংকৃত অংশ নয়।

দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, নির্বাচন-পরবর্তী মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি কী হতে পারে, তা নিয়ে ততই মানুষের মনে প্রশ্ন জাগছে। এর উত্তর অনিশ্চয়তার আবরণে মোড়ানো আছে।নির্বাচনে কে জিতবেন, তা এখনো অনিশ্চিত। গ্রীষ্মের শুরুতে, জরিপগুলো দেখাচ্ছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। কিন্তু যখন বাইডেনের জায়গায় ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে গেলেন, তখন জনসমর্থনের গতিপথ ঘুরতে শুরু করল। তখন আবার জরিপে কমলাকে ট্রাম্পের চেয়ে সামান্য এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে।এখন সমস্যা হলো, ভোটারদের অনুভূতি যদি এত দ্রুত বদলাতে পারে, তাহলে আগামী ৫ নভেম্বর নাগাদ তাঁদের সেই পছন্দ-অপছন্দের দোলাচল কোথায় গিয়ে স্থির হবে, তা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা অসম্ভব।যদিও কমলা হ্যারিস বেশ চমক দেওয়ার মতো রাজনৈতিক দক্ষতা দেখাচ্ছেন; তবে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে চমকের শেষ বলে কিছু থাকে না। এখানে যখন-তখন যা কিছু ঘটতে পারে।প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কিন নাগরিকদের পাশাপাশি এই অর্থে বিদেশি নেতা এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরও ভোট আছে যে বিদেশি নেতা ও প্রভাবশালী গোষ্ঠীর আচরণ ও কর্মকাণ্ড আচমকা মার্কিন এজেন্ডা ও বিভিন্ন ফলাফলের সম্ভাবনাকে পাল্টে দিতে পারে। যেমন জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০০ সালের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে যে পররাষ্ট্রনীতির রূপরেখা দিয়েছিলেন, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর সেসব নীতির কিছুই তিনি আর অনুসরণ করেননি। ঠিক সেভাবেই ভ্লাদিমির পুতিন কিংবা সি চিন পিংয়ের আচরণ মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে কখন কী চমক আনবে, তা কে বলতে পারে। নির্বাচনী প্রচারাভিযানের বিবৃতি থেকে অবশ্যই একজন নেতার নীতি সম্পর্কে কিছু না কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

অনেকে আশা করতে পারেন, কমলা হ্যারিস জয়ী হলে বাইডেনের নীতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকতে পারে। বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতির একটি বড় থিম হলো বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়া। কমলা অবশ্য বাইডেনের এই নীতি প্রচারের ওপর অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্ব দিচ্ছেন, যদিও তিনি ফিলিস্তিনিদের অধিকারের ব্যাপারে বাইডেনের চেয়ে আরও বেশি কিছু বলেছেন। তবে তিনি মার্কিন জোটকে শক্তিশালী করার এবং বহুপাক্ষিকতার প্রচারের কাজে বাইডেনের নীতি অনুসরণ করবেন বলে মনে হচ্ছে। ট্রাম্পের নীতি অনিশ্চিত। যদিও সব রাজনীতিবিদই কী করবেন, কী করবেন না-সে বিষয়ে কিছুটা ফাঁক রেখে দেন। কিন্তু ট্রাম্প এ ব্যাপারে কুখ্যাত। তাঁর কোন বক্তব্য যে তাঁর নীতি, আর কোনটা নয়, তা জানা কঠিন। একতরফাবাদের প্রতি তাঁর সমর্থন এবং জোটভিত্তিক ও বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কমজোরি করার বিষয়ে তাঁর ভাষণ ও কথাবার্তা তাঁর বিদেশনীতির ব্যাপারে আমাদের একটা ধারণা দেয় বটে, তবে তা সুনির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আমাদের প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর দেয় না। প্রার্থীরা তাঁদের উপদেষ্টা হিসেবে কাকে কাকে নিয়োগ দিয়েছেন, তা দেখে অনেক সময় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা তাঁদের ভবিষ্যদ্বাণীকে জোরালো করার চেষ্টা করেন। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে যদি দেখা যায়, তাহলে আমরা দেখতে পাই, কমলা হ্যারিসের পররাষ্ট্রনীতির মাথা হলেন ফিলিপ গর্ডন। ফিলিপ একজন বাস্তববাদী রাজনীতিক। তিনি অত্যন্ত সম্মানিত একজন মধ্যপন্থী নেতা, যিনি কমলার প্রধান পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা হওয়ার আগে ডেমোক্রেটিক প্রশাসনে ইউরোপীয় ও মধ্যপ্রাচ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলো পরিচালনা করেছিলেন। বিপরীতে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা কে হবেন, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না; যদিও সংবাদমাধ্যমগুলো মাঝেমধ্যে ট্রাম্পের সর্বশেষ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েনের কথা উল্লেখ করছে।

আমরা জানি,ট্রাম্প তাঁর আগের মেয়াদে তাঁর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে যে প্রথাগত রিপাবলিকানদের নিয়োগ করেছিলেন, তাঁদের জন্য তাঁকে অনুশোচনা করতে হয়েছিল। কারণ, ওই উপদেষ্টারা নিয়মতান্ত্রিক দায়িত্ব পালন করেছেন, যা ট্রাম্পের কাজের স্বাধীনতাকে হ্রাস করেছিল। ট্রাম্প তাঁর নীতিগুলোকে যতটা আক্রমণাত্মক ও পক্ষপাতমূলক করতে চেয়েছিলেন, ওই উপদেষ্টাদের কারণে তিনি তা করতে পারেননি। তাঁদের কারণে ট্রাম্পকে তাঁর নীতিগুলোকে অপেক্ষাকৃত মধ্যপন্থী করতে হয়েছিল। তবে দুই প্রার্থীর মধ্যে লক্ষ করার মতো কিছু মিল রয়েছে। চীন সম্পর্কে তাঁদের অবস্থান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই শিবিরের মধ্যে কিছু বিষয়ে অভিন্ন মত রয়েছে। এর একটি হলো চীন ইস্যু। কমলা ও ট্রাম্প দুজনই মনে করেন, চীন বাণিজ্য এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি ইস্যুতে ন্যায্য ভূমিকা পালন করেনি। তাঁরা দুজনই মনে করেন, পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আগ্রাসী আচরণ জাপান ও ফিলিপাইনের মতো আমেরিকান মিত্রদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীন বহুবার বলেছে, তারা তাইওয়ানকে একটি অবাধ্য প্রদেশ হিসেবে মনে করে এবং তাইওয়ানের ওপর নিজেদের পূর্ণ দখল প্রতিষ্ঠিত করতে তারা দ্বীপটিকে প্রয়োজনে সর্বাত্মকভাবে দখল করে নেবে। চীনের মতো অনেকগুলো ইস্যুতে বাইডেন ট্রাম্পের নীতি অনুসরণ করে এসেছেন এবং কমলা হ্যারিসও সম্ভবত সেই পথেই হাঁটবেন। এই দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় মিল হলো, তাঁরা দুজনই নব্য উদারনৈতিক অর্থনৈতিক নীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মার্কিন বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রথাগত রিপাবলিকান পদ্ধতি পরিত্যাগ করেছিলেন। তিনি আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছিলেন এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কমিয়েছিলেন। এর সবই করা হয়েছিল মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইথাইজারের নির্দেশনায়, যিনি এখনো ট্রাম্পের বলয়ে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে রয়েছেন।

পূর্বসূরি ওবামা উদ্যোগ নিয়ে যে ট্রান্স-প্যাসিফিক অংশীদারি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হয়ে সেই অবস্থা থেকে সরে এসেছিলেন। ট্রাম্পের পর বাইডেন ক্ষমতায় এসে ট্রাম্পের সরে আসা চুক্তিতে ফিরে যাননি এবং চীন থেকে পণ্য আমদানিতে ট্রাম্প যে বাড়তি কর আরোপ করেছিলেন, সেটিও বাতিল করেননি। আসলে বাইডেন চীনের বিরুদ্ধে নতুন প্রযুক্তিকেন্দ্রিক রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ প্রবর্তন করে চীনবিরোধিতায় আরও এগিয়ে যান। কমলা হ্যারিস জিতলে সেই উচ্চতা কমাবেন বলে মনে হয় না। আর ট্রাম্প জিতলে সেই তার পরিধি আরও বাড়াবেন বলে মনে হচ্ছে। এ ছাড়া ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস উভয়ই প্রতিরক্ষা বাজেট এবং প্রতিরক্ষা শিল্প খাতে অধিকতর বিনিয়োগের মাধ্যমে আমেরিকান ‘হার্ড পাওয়ার’ আরও শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। উভয়ই বর্তমান পারমাণবিক অস্ত্র আধুনিকীকরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। দুজনেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে অত্যাধুনিক অস্ত্রের বিকাশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তবে দুজনের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্যগুলোর অন্যতম হলো ইউরোপ অবস্থান নিয়ে। ট্রাম্প এবং তাঁর রানিংমেট জে ডি ভ্যান্স স্পষ্ট করেছেন, ইউক্রেন এবং ন্যাটোকে সমর্থন করার ব্যাপারে তাঁদের আগ্রহ কম। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন। ইউক্রেনকে নাটকীয়ভাবে দুর্বল না করে এটি কীভাবে করা যাবে, তা বোঝা কঠিন। মধ্যপ্রাচ্যে উভয় প্রার্থীই ইসরায়েলের নিরাপত্তা এবং আত্মরক্ষার অধিকার বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন; যদিও কমলা হ্যারিস ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের কথাও বলেছেন। উভয়ই সম্ভবত সৌদি আরবকে ইসরায়েলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কাজ এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাবেন। উভয়েই ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবেন। তবে ট্রাম্প আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকাকে কম অগ্রাধিকার দিলেও কমলা হ্যারিস ওই অঞ্চলগুলোতে আরও মনোযোগ দেবেন বলে আশা করা যেতে পারে।

তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির নির্বাচনী প্রচারশিবির কমলার এই পয়েন্টকে মোটেও সামনে আনছে না। অবশ্য এর মানে এই নয় যে কমলা তাঁর বংশপরিচয়, তাঁর বেড়ে ওঠা বা আনুষঙ্গিক পটভূমি নিয়ে কোনো লুকোছাপা করছেন। ট্রাম্প সপ্তাহ দুয়েক আগে অন্য রিপাবলিকানদের বিব্রত করে দিয়ে কমলার বিরুদ্ধে পরিচয় পরিবর্তন করে একজন কৃষ্ণাঙ্গ হয়ে ওঠার অভিযোগ করেছেন। ট্রাম্পের এই আচরণ আরও একবার প্রমাণ করেছে, তিনি মানসিকভাবে ঠিক আছেন কি না, তার পরীক্ষা হওয়া দরকার।বিশেষজ্ঞদের ধারণা, হিলারি ক্লিনটনের পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে কমলা এই অবস্থান নিয়েছেন। আমেরিকার অনেক লোক 'প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট’ ধারণাটি পছন্দ করেন না। নারী প্রেসিডেন্টের ধারণা তাঁদের কাছে অস্বস্তিকর।‘নারী প্রেসিডেন্ট’ কথাটি উঠলেই সে আলাপকে উচ্চবিদ্যালয়গুলোতে আজকাল মেয়েরা কীভাবে ছেলেদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে; কর্মক্ষেত্রে নারীদের তুলনায় পুরুষেরা কতটুকু পিছিয়ে পড়ছে; এসব আলাপের মতো মনে হয়। ফলে ‘নারী’ উপাধি নিয়ে রাজনৈতিক বক্তৃতা করার ঝুঁকি আছে। এতে অনেক ভোটার বিরক্ত হয়। কমলা হ্যারিসকে এমন একটি দেশে একজন মিশ্র বর্ণের নারী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে, যে দেশে এ পর্যন্ত নির্বাচিত হওয়া ৪৬ জন প্রেসিডেন্টের সবাই পুরুষ এবং একজন বাদে সবাই শ্বেতাঙ্গ। ‘ইতিহাস গড়তে আমাকে ভোট দিন’, এই স্লোগানের পথে কমলা হাঁটতে পারছেন না, কেননা এতে আত্মপ্রচার কিংবা নারী হিসেবে বাড়তি অনুকম্পা প্রার্থনার মতো একটি আবেদন আছে। এ কারণে তিনি তাঁর নারী পরিচয়কে নির্বাচনী প্রচারের মধ্যে টানছেন না। এটি তাঁর জন্য এখন পর্যন্ত ভালো ফল বয়ে আনছে। যদিও কমলা হ্যারিস বেশ চমক দেওয়ার মতো রাজনৈতিক দক্ষতা দেখাচ্ছেন; তবে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে চমকের শেষ বলে কিছু থাকে না।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট, যুক্তরাজ্য।


আমার বার্তা/জেএইচ