মেধাবী ছাত্রনেতা থেকে জননেতা ফখরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু
প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:২২ | অনলাইন সংস্করণ
হুমায়ুন আহমেদ:

দীর্ঘ ৪০ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ৪৪টি মামলার আসামি হয়েছেন, স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে রাজপথ কাঁপিয়েছেন, বছরের পর বছর ধরে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে রুখে দাঁড়িয়েছেন, সম্মুখ সারিতে দাঁড়িয়ে আওয়ামীলীগকে মোকাবেলা করেছেন বীরদর্পে। আর এসব করতে গিয়ে গুলি খেয়েছেন, ৪৪টি রাজনৈতিক মামলার আসামী হয়ে বারবার গ্রেপ্তার হয়েছেন, জেল খেটেছেন ফেরারি জীবন যাপন করেছেন, এমনকি সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে আহত হয়েছেন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ফখরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু। ভালুকা উপজেলা তথা ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপিতে ফখরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু শুধু একটি নাম নয় বরং বলা যায় তিনি একজন আন্দোলন সংগ্রামের রোল মডেল, নির্যাতিত নিপিড়ীত নেতাকর্মীদের ভরসার আশ্রয়স্থল।
ভালুকার ঘরে ঘরে, পরিবার থেকে পরিবারে, পাড়া- মহল্লায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ, বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের সৈনিক তৈরি করতে সকাল থেকে সন্ধ্যা, ভোর থেকে মধ্যরাত অবধি কঠোর পরিশ্রম, দূরদর্শী পরিকল্পনা, তুখোড় সাংগঠনিক মেধা ও মননের সমন্বয়ে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা, বিএনপিসহ প্রতিটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে সুসংগঠিত করা, নিজের জীবনকে বিপন্ন করে গুলির মুখে ছাত্রজীবন থেকে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে, দলীয় কার্যক্রমে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসা ভালুকার মাটি ও মানুষের এই নেতা ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছেন ভালুকার রাজনীতি ও রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, বছরের পর বছর ধরে অভিভাবকহীন ভালুকা উপজেলা ও পৌর বিএনপির অভিভাবক, মামলা হামলায় জর্জরিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত নেতাকর্মীদের আস্থা, বিশ্বাস ও ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল, ভালুকা থেকে বারবার ধানের শীষের নমিনী, ভালুকা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহবায়ক, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও ভালুকা উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ, কারানির্যাতিত জননেতা ফখরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু।
বর্তমানে মিথ্যা অনলাইন নিউজের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের কারণে দলীয় কোন পদে নেই কিন্তু বিএনপির নিবেদিত প্রাণ এই জননেতা তবুও তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও বরং হুহু করে তা বেড়েই চলেছে। দলীয় সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিয়ে আমৃত্যু দলের একজন কর্মী/ সমর্থক হয়ে থাকার দৃড় প্রত্যয় নিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে সেই ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। যদিও তাকে ছাড়া পিন পতন শুন্যতার মাঝেও বিএনপির তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা বিশ্বাস করেন, তার বিরুদ্ধে আনীত মিথ্যা, ভিত্তিহীন, ষড়যন্ত্রমূলক যেসব কল্পিত বানোয়াট অভিযোগ করা হয়েছিল তা দলীয় তদন্তের মাধ্যমেই দ্রুত সত্যিটা সবার সামনে আসবে, আর সবকিছু নিষ্পত্তি করে দল তাকে পূর্ণ সম্মানে দলীয় পদে পুনরায় বহাল করবেন।
এদিকে ফখরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে দল থেকে বহিষ্কারের পর শিল্পসমৃদ্ধ এই জনপদ হয়ে উঠেছে নিয়ন্ত্রনহীন, উনার অবর্তমানে ভালুকায় যে রাজনৈতিক শুন্যতা তৈরি হয়েছে তাকে পুঁজি করে চারদিক হয়ে উঠেছে অশান্ত। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে, দলের ভেতর ঢুকে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে বিভাজন তৈরি করে দলকে দুর্বল করে দেয়ার অপচেষ্টাও করছে তারা।
সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ওয়াজ মাহফিল, ইসলামী মহাসম্মেলন সহ নানা সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করছেন তিনি। উপজেলার যেখানেই উনার উপস্থিতি, যেখানেই উনার পদচিহ্ন সেখানেই জনতার জোয়ার, মুহুর্তেই জনস্রোত যেন আছড়ে পড়ে। কোথাও কোন রাস্তায় হেঁটে গেলে পিছনে তা মিছিলে রুপ নেয় মুহুর্তেই। শত সহস্র নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ জনতা, সবার সাথে সর্বদা হাসিমুখে কুশল বিনিময় থেকে শুরু করে সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেন। নিরবে নিভৃতে অসুস্থ্য নেতাকর্মীদের চিকিৎসায় অংশগ্রহণ, দরিদ্র ছাত্রছাত্রীর লেখাপড়ার খরচ বহন, নিকট অতীতে বছরের পর বছর অজস্র নেতাকর্মীদের মামলার খরচ বহন, জেলখানায় সাধ্যমতো তাদের সাহায্য করা, সবার পরিবারের খোঁজ খবর নেয়া, আর্থিক সাহায্য প্রদান, উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ, অনুদান প্রদান, মৃত নেতাকর্মীদের কবর জিয়ারত করা থেকে শুরু করে সর্বদা নেতাকর্মীদের সুখে দু:খে বিপদে আপদে পাশে থাকার চেষ্টা করেন, শত ব্যস্ততার মাঝেও চেষ্টা করেন সবার ফোন ধরার, কারও ফোন কল মিস হয়ে গেলে চেষ্টা করেন পুনরায় ফোন করতে। আর এসব কারনেই ভালুকার শত সহস্র মানুষের মাঝে তিনি অনন্য অসাধারণ একজন তুমুল জনপ্রিয় নেতা।
সর্বশেষ সম্প্রতি উপজেলার বিরুনিয়া ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কৃষক সমাবেশে দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান দেখিয়ে জনতার কাতারেই বসেছিলেন পুরোটা সময়, সমাবেশটি সফল করে দেয়ার জন্য কাজ করেছেন নিরবেই, ফলশ্রুতিতে কৃষকদলের সমাবেশটি রূপ নিয়েছিল ঐতিহাসিক মহাসমাবেশে। ভাওয়ালিয়াবাজু উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ সেদিন এক আবেগঘন মুহুর্তের স্বাক্ষী হয়েছে, উনার জনপ্রিয়তার নিরব স্বাক্ষী হয়েছেন সেই সমাবেশে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। হাজার হাজার নেতাকর্মীর কন্ঠে বাচ্চু ভাই বাচ্চু ভাই স্লোগানে মুখরিত সেই সমাবেশে উনাকে মঞ্চে না পেয়ে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি অনেকেই, নিরবে অনেকের চোখ ভিজেছে, কয়েকজন নেতাকর্মীর বুকফাঁটা আর্তনাদের ভিডিও এখনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল।
ভালুকার আপামর জনসাধারণ এখনো বিশ্বাস করেন, অচিরেই সকল ষড়যন্ত্রের অবসান ঘটবে, দলীয় সিদ্ধান্তেই পুনরায় বিএনপিতে ফিরবেন তিনি, দলের হাল ধরবেন পুনরায়। মানুষ বিশ্বাস করে অতীতের মত আগামীতেও উনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমেই ভালুকায় বিএনপির এই গণজাগরণ পুনরুজ্জীবিত হবে, চলতেই থাকবে। দলীয় সিদ্ধান্তে উনার প্রত্যাবর্তনে স্বস্তি ফিরবে শান্ত এই জনপদে, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ!
লেখক: সাংবাদিক, অনলাইন ও সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট
আমার বার্তা/হুমায়ুন আহমেদ/এমই