দুদকের ভিতরে দুর্নীতির আখড়া: রফিকুল আমীন
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৫, ১৩:৫২ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টির আহবায়ক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আমীন বলেছেন, দুদকের ভিতরে দুর্নীতির আখড়া। আমি যখন তাদের মুখোমুখি হয়েছি তখন দেখতে পেয়েছি তারা কিভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিল।
বুধবার (১৪ মে) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি আয়োজিত মিট দ্যা রিপোর্টার্সে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টির আহবায়ক বলেন, দুদক দুর্নীতিবাজ প্রতিষ্ঠান। দুদকে টর্চার সেল ছিল। গরম পানি ঢালা হতো। দুদকের লোকজন আমাদের বিনিয়োগকারীদের গালে ঠাস ঠাস চর মেরেছে। যত মামলা হয়েছিল আমার বিরুদ্ধে কোন সাক্ষী ছিল না। ২১৯ জন সাক্ষী করেছে সরকারি ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের। আমার মামলার রায় হওয়ার আগে সাজা খেটে ফেলেছি। আপনারা কেউ স্বপ্নেও জানেন দুদক নির্যাতন করতে পারে।
রফিকুল আমীন বলেন, আমাকে হুমকি দেয়া হয়েছে, আপনি যদি আমাদের কথা না শুনেন আপনার বউ বাচ্চা ধরে নিয়ে আসবো। আমি তাতে রাজি না হওয়ায় আমার বউকে আসামি করা হয়েছে। আমার বউ এখনো জেলে আছে। আমার দুইটা নাবালক বাচ্চা একা একা বারোটা বছর বড় হয়েছে। আমার বাচ্চাদের জবাব দিতে পারি না, তারা বলে আমার আম্মুকে নিয়ে আসো। আমরা সবাই বাইরে। কিন্তু আমার স্ত্রী এখনো ছেলে আছে। আমার স্ত্রী ডেসটিনির সঙ্গে জড়িত ছিল না। তাহলে আমার স্ত্রীর কি দোষ? ফ্যাসিস্ট সরকারের পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন এখনও চাকরি করছেন।
তিনি বলেন, আমি অন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাজনৈতিক দল গঠন করেছি। আমি মজলুমের পাশে দাঁড়াবো। এখনো অনেক মানুষ বিনা অপরাধে জেল খাটতেছে। অনেকে ডিবির অত্যাচারে বাথরুমে গিয়ে গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছি। কার কলকাটিতে এইসব লোকজন এখনো জেল খাটবে? তাদের কেন জামিল হবে না। সুবিচার পাওয়ার জন্য জামিন দিতে হবে। অনেক মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়নি। কিন্তু এখনো জেল খাটছেন। রফিকুল আমিন যেদিন তার ১২ বছর সাজা খবর পেয়েছি। সেদিন তার ১২ বছরের বেশি সাজা খাটা হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে প্রতিহিংসা থাকা উচিত নয়। রাজনীতি হলও জনগণের স্বার্থে কথা বলা। আমি রাজনীতিতে ধান্দাবাজির জন্য আসিনি। যত বেশি দল তৈরি হবে। তত বেশি গণতন্ত্র চর্চা হবে দেশে। দেশের অনেক ক্লিন ইমেজের লোক আছে। যারা দল না থাকায় নির্বাচন করতে পারছেন না। তাদেরকে আমরা নমিনেশন দেবো। আমি কখনোই গণতন্ত্রকে ব্যাহত করব না। কোনও দলের সঙ্গে যাব কি যাব না সেই সিদ্ধান্ত এখনো নেয়নি। আমি ন্যায় বিচার ও নির্যাতনের প্রতিবাদ করার জন্য রাজনৈতিক দল করেছে। আমার খারাপ পদ্ধতির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দল। আমি দেশের ন্যায় বিচার চাই ও সুসংশন প্রতিষ্ঠা চাই। আমার সঙ্গে অন্য কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংঘাত করবে না। আমার সঙ্গে যারা অন্যায় করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমি আইনি প্রক্রিয়ায় যাব। আমরা ক্ষতিপূরণ দাবি করব প্রয়োজনে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্ন জবাবে তিনি বলেন, আমি এখন কোনও ব্যবসা করি না। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু ছিল না। গত ১৩ বছর ব্যবসা থেকে দূরে আছি। সরকারের বিভিন্ন মহলে বলেছি আমাকে ব্যবসা করার সুযোগ দেয়া হোক, কিন্তু আমাকে একটু দিচ্ছে না। আমায় রাজনীতি করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা।
ডেসটিনিতে যারা বিনিয়োগ করেছে, ওই টাকা ফেরত দেওয়ার মালিক ডেসটিনির বর্তমান বোর্ড। আমাকে যদি আবার পুনরায় ম্যানেজিং ডিরেক্টর করা হয়, তাহলে আমি মানুষের টাকা ফেরত দিতে পারব। সরকার ব্যাংক হিসাব খুলে দিলে তার পরের মাস থেকেই বিনিয়োগকারীদের টাকা দেওয়া শুরু হবে। আমি এখনো ম্যানেজমেন্ট দিয়ে ঢুকতে পারেনি। আমি ডেসটিনি বাদ দিয়ে কোন কোম্পানি করিনি। আমি নতুন একটি ই-কমার্স কোম্পানি করেছি। ডেসটিনির কোন ঋণ নেই কোন দায় নেই। ডেসটিনি গ্রুপের ছয় থেকে সাত হাজার কোটি টাকা সম্পদ আছে। এখানে দায় আছে ৩ হাজার কোটি টাকা।
রফিকুল আমীন আরও বলেন, আম জনগণ পার্টির নিবন্ধন পাওয়ার জন্য যেসব ক্যাটাগরি আছে, তা পূরণ করে ২২ শে জুন এর আগে নির্বাচন কমিশনে জমা দেবো।
তিনি বলেন, সততার সঙ্গে দুই পয়সা আয় করতে ডেসটিনির বিকল্প নেই। সততা সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা নয়। সততা একমাত্র পন্থা। ডেসটিনিতে সব সময় সততার সঙ্গে ব্যবসা করেছি। আমি যখন এই কাজগুলো করছিলাম। তখন ফ্যাসিস্ট সরকারের রোষানলে পড়ে গেছি। আমার নামে মিথ্যা স্টোরি ছাপিয়ে এবং মিথ্যা মানি লন্ডারিং মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছিল। আমার মামলা এজাহারগুলো পড়লে আপনার ভালো করে বুঝতে পারবেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন সভাপতিত্ব করেন। এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। এর আগে শফিকুল আমীনের সংক্ষিপ্ত জীবনী উপস্থাপন করেন সোহেল। এ সময় তাকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করে রিপোর্টার্স ইউনিটি।
আমার বার্তা/জেএইচ