রকিব-নূরুল হুদা-আউয়ালদের বিরুদ্ধে রোববার মামলা করবে বিএনপি
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৫, ১৯:৫৩ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএনপি।
রোববার (২২ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করা হবে বলে বিএনপির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, রোববার সকালে কমিশন কার্যালয়ে গিয়ে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পৌঁছে দেবেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। পরে সালাহউদ্দিন শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করবেন। মামলার কাগজে স্বাক্ষর থাকবে বিএনপি মহাসচিবের।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ‘একতরফা বিনা ভোটের’ নির্বাচন আয়োজনের অন্যতম কারিগর ছিলেন কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কমিশন। ভোট ছাড়াই ১৫৩টি আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের জয়ী ঘোষণা করে বিতর্কিত নির্বাচনের নজীর গড়ে কাজী রকিবউদ্দীন কমিশন।
ওই নির্বাচনে তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ বেশিরভাগ দল অংশ নেয়নি। আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীসহ মাত্র ১২টি দল অংশ নিয়ে সরকার গঠন করে। ওই কমিশনের সিইসি ছিলেন কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। তার আমলে চারটি সিটি করপোরেশন ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোও ছিল বিতর্কিত। কিন্তু তাতে তার অনুশোচনা দেখা যায়নি।
বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে রকিবউদ্দীন বলেছিলেন, ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া দোষের কিছু নয়, আইনে আছে। আর কেউ মাঠ ছেড়ে দিলে তো প্রতিপক্ষ গোল দেবেই। এটা রাজনীতির খেলা। ওই সময়ে নির্বাচন কমিশনার ছিলেন মোহাম্মদ আব্দুল মোবারক, মোহাম্মদ আবু হাফিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী ও মো. শাহনেওয়াজ।
২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচনের পর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ভোটের আগের রাতেই আওয়ামী লীগের পক্ষে ব্যালটে সিল মারা হয়। ফলাফলও হয় একতরফা। নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট পায় ২৮৮টি আসন। অপরদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পায় মাত্র ৮টি আসন। তখনকার কে এম নূরুল হুদা কমিশন বিষয়টি জানার পরও ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো ধামাচাপা দেয়। ওই কমিশনের সিইসি ছিলেন কে এম নুরুল হুদা। ওই কমিশনের নির্বাচন কমিশনার ছিলেন মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। আরেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার মারা গেছেন।
আওয়ামী লীগের দলীয় ও একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচন করে ‘আমি-ডামি ভোট’ উপাধি পায় কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। ওই কমিশনের বেশিরভাগ কার্যক্রম নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ওই নির্বাচনে ভোটের হার নিয়ে বড় ধরনের বিতর্ক তৈরি হয়। ভোটের দিন বেলা ৩টা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ১৫ ভাগ ভোট পড়ে বলে জানানো হলেও এক ঘণ্টার ব্যবধানে ভোটের হার ৪০ শতাংশ বলে উল্লেখ করা হয়। অবশ্য ভোটের হার ঘোষণার সময় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রথমে ২৮ শতাংশ ভোট পড়ার কথা বলে পরে তা সংশোধন করে ৪০ শতাংশের কথা বলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হাবিবুল আউয়াল লোকচক্ষুর অন্তরালে অবস্থান করছেন। ওই কমিশনের নির্বাচন কমিশনার ছিলেন-ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, মো. আনিছুর রহমান, মো. আলমগীর ও বেগম রাশেদা সুলতানা।
আমার বার্তা/এমই