
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, নির্বাচনী প্রতীক নির্ধারণ ও নিবন্ধনের প্রক্রিয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে দলীয় স্বার্থ বিবেচনায় ইসির প্রস্তাবিত প্রতীক ‘শাপলা কলি’ গ্রহণ করে দ্রুত নির্বাচনের মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।
দলটির নেতারা জানিয়েছেন, তারা এককভাবে ৩০০ আসনে নির্বাচন করবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে শাপলা কলির।
রোববার (২ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক।
নির্বাচন কমিশনকে ‘ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন’ আখ্যা দিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, প্রতীক নির্ধারণের ক্ষেত্রে ইসি স্বেচ্ছাচারী আচরণ করছে। নির্বাচন কমিশন খুব ধীরগতিতে চলাফেরা করছে। আমরা অনেক আগে আবেদন করেছিলাম, এ পর্যন্ত তারা কোনো সমাধান করতে পারেনি। ...নির্বাচন কমিশনকে যদি সংক্ষিপ্ত শব্দে বলতে বলেন, আমরা এটাকে নির্বাচন কমিশন বলতে পারি না বা ইলেকশন কমিশন বলতে পারি না। এটাকে ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন বলতে পারি। ইসি প্রথমে বেশ কিছু ‘অজাতীয়’ প্রতীক (যেমন- বেগুন, খাট) বাদ দিলেও পরে ‘শাপলা কলি’ প্রতীকটি অন্তর্ভুক্ত করেছে। ইসি এক ধাপ এগিয়ে চিন্তা করে ‘শাপলা’ প্রতীকের সঙ্গে ‘কলি’ যুক্ত করেছে, যা আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি। দ্রুত নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শেষ করে প্রতীক নিয়ে মাঠে নামার কথাও জানান তিনি।
বিএনপির সঙ্গে জোটের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওঠা গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপি এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। আমাদের বিশ্বাস, ‘ধানের শীষ’ ও ‘শাপলা কলি’ প্রতীকের মধ্যে আগামী নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তিনি অভিযোগ করেন, বড় দলগুলো ছোট দলগুলোকে নিজস্ব প্রতীকের অধীনে কুক্ষিগত করে বাংলাদেশে একদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে।
ভবিষ্যতে বিএনপির সঙ্গে এনসিপি জোটবদ্ধ হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, সেক্ষেত্রে বিএনপিকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি অবশ্যই ছেড়ে আসতে হবে এবং সংস্কারের পক্ষে থাকতে হবে। একইভাবে জামায়াতে ইসলামী যদি ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ এবং ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি থেকে সরে আসে, তবে সে বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে। তবে আমরা আপাতত জোটের কোনো চিন্তা করছি না। আমরা বলেছিলাম যদি বিএনপি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি এগুলো ছেড়ে আসে এবং সংস্কারে তারা পক্ষে থাকে, সেটা আমরা ভেবে দেখব।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, মাঠ পর্যায়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই এবং ইসি তা নিশ্চিত করতে পারেনি। অন্য দলের জোট সঙ্গীরা হামলার শিকার হচ্ছে বলে এসময় উল্লেখ করে তিনি।
আইন মন্ত্রণালয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে ‘গোপন প্রেমের কারখানা’ তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, এটি গণতন্ত্রের যাত্রা ব্যাহত করছে।
গণভোট নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতকে মুখোমুখি অবস্থানে না থাকার আহ্বান জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, কারণ এতে নির্বাচন পেছানোর সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। গণভোট নির্বাচনের দিন বা আগে হলেও ফলাফল একই হবে।
আমার বার্তা/এমই

