মামলা নিয়ে ব্যাবসার মূল হোতা প্রতারক নাজমুল এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:৩৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশ জুড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যে মহৎ উদ্দেশ্যেকে সামনে নিয়ে সংঘটিত হয়েছিল,শত শত শহীদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল। সেই উদ্দেশ্যকে অনেকটা ম্লান করে দিচ্ছে কিছু প্রতারক চক্র। যাদের মধ্যে ফরিদপুরের কে এম নাজমুল ইসলাম অন্যতম। পেশায় তিনি গণপূর্তের ঠিকাদার। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সময় সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের ভাগ্নে পরিচয়ে তিনি গণপূর্তে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন।
অনেক নির্বাহী প্রকৌশলীকে তিনি মামার (সচিব) ভয় দেখিয়ে কাজ হাসিল করেছেন।কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি তার পরিচয় পাল্টে ফেলেন। তিনি নিজেকে বিএনপি'র নেতা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অফিসারদের মামলার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল শুরু করেন। অনেক বড় একটি প্রতারক চক্র গড়ে তোলেন। তার নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন স্থানে সচেতন নাগরিক সেজে মামলা শুরু করা হয়। যেখানে অনেক নিরীহ মানুষকে আসামি করা হয় এবং পরবর্তীতে তাদেরকে ফোন দিয়ে টাকা দাবি করা হয় মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য।
আমাদের অনুসন্ধানী টিম কে এম নাজমুল ইসলাম সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে শুরু করলে জানতে পারে তিনি হাসিনার শাসনামলে গোপালগঞ্জের বাসিন্দা দাবি করতেন। সম্প্রতি কে এম শাহরিয়ার শুভ বাদী হয়ে বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে একটি মামলা করেন। যার মামলা নং সি আর ৮৭৪ /২০২৪ (পল্টন)। যেখানে ফরিদপুরের অসংখ্য নিরীহ মানুষ সহ প্রায় ২০ জন গণপূর্তের অফিসারের নাম দেওয়া হয়েছে। আরো অনুসন্ধানে দেখা যায় বাদী কে এম শাহরিয়ার শুভ এর আপন বড় ভাই কে এম নাজমুল ইসলাম। উভয়ের পিতা -কাজী আব্দুল হান্নান, মাতা -জাহানারা বেগম।শাহরিয়ার শুভর এন আই ডি নং -৯৫৬০৫৩৬১৮৮ এবং নাজমুল ইসলাম এর এনআইডি নং-২৯২৪৭০৪১৬৯২৬৯।নাজমুল ইসলাম যে মোবাইলটি ব্যবহার করেন তা তসলিমা জাহান মিম নামে এক মহিলার নামে নেওয়া।যার বাসা মাদারীপুর শিবচর। তবে এই মহিলার সাথে প্রতারক চক্র নাজমুলের কি সম্পর্ক তা এখনো জানা যায়নি।শাহরিয়ার শুভ, নাজমুল ইসলাম এবং তসলিমা জাহান মিমকে দ্রুত গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পুরো প্রতারক চক্রটিকে ধরা যাবে বলে অনুসন্ধানী টিম মনে করে।
২৯শে অক্টোবর সিএমএস আদালতে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত আরেকজন ঠিকাদার ১৯৬ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন যেখানে ৫৩ জন সাবেক সচিবকে আসামী করা হয়েছে।
গত ১২ই অক্টোবর মোহাম্মদপুর থানায় আরেকটি মামলা 'করা হয়েছে যেখানে ৭৬ জন কৃষি কর্মকর্তাকে আসামী করা হয়েছে। যেহেতু সকল মামলার ধরণ একই রকম তাই ধারণা করা হচ্ছে প্রতারনা করার উদ্দেশেই এই মামলাগুলো করা হয়েছে এবং একই প্রতারক চক্র এ কাজগুলো করছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন যাঁরা ভুয়া মামলা করবেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাধারণ জনগণ দ্রুত এ প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখতে চায়। নাহলে এ প্রতারক চক্রের ফাঁদে অসংখ্য নিরীহ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
আমার বার্তা/এমই