ফের চাঁদার দৌরাত্ম্যের উঁকিঝুঁকি

পুলিশের অনীহা বাগড়া টপকাচ্ছে পদক্ষেপ হীনতা

প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৪ | অনলাইন সংস্করণ

  কামরুজ্জামান মিল্টন:

  •     ফুটপাত চাদায় কিছুটা ভাটা,মাথাচাড়া বরাবরের ছোট বাহনের স্ট্যান্ড বাণিজ্যের
  •     মতিঝিলে পুলিশ,নেতা মিলেমিশে একাকার। বাড়ছে-ক্ষোভের ধিক্কার

রাজধানীজুড়ে ফের শুরু হয়েছে-বরাবরের সেই জনদুর্ভোগের হরেক খুচরা চাঁদার দৌরাত্ম্যের উঁকিঝুঁকি। তবে বেশিরভাগ এলাকায়ই আছে-পুলিশের সম্মতিহীনতা,এমনকি বরাবরের মত তাতে পুলিশের নাম জড়াতে অনিহার বাগড়া। তবে ধীরে ধীরে তা টপকাচ্ছে-কার্যকারি পদক্ষেপহীনতা। বরাবরের মত প্রায় সর্বত্রই তা চলতে শুরু করলেও খোলামেলা ভাবে নয়,বরং লোকচক্ষু আড়াল করে,সতর্কভাবে। আবার এর মধ্যে কিছু কিছু এলাকায় পুলিশ,স্থানীয় নেতা ,হকার মিলেমিশে ভাই ভাই হয়ে চালাচ্ছে-ওই সব চাঁদার কারবার। গত ৫ আগস্ট দেশের পট পাল্টানোর পর রাজধানীর বহু পুরোনো ও স্বীকৃত প্রায় সেই খুচরা চাঁদাবাজি,অর্থাৎ যেমন-পুলিশের টাকা নামের জনদুর্ভোগময় ফুটপাতের তোলা বাণিজ্যে নামে ধস,থমকে দাঁড়ায় হকারদের রক্তচোষা বখরা বাণিজ্য। তেমনি-বন্ধ হয়ে যায় ছোট পরিবহনের (টেম্পু, লেগুনা, অটোরিকশা) স্ট্যান্ড চাঁদাবাজি।

দ্বিতীয়ত পল্টন-পল্টন থানা এলাকার নয়াপল্টন রোড ও গুলিস্তানের হকার অধ্যুষিত এলাকায় বিভিন্ন খরচের অজুহাতে হকার শ্রেণীর কিছু লোক নতুনভাবে টুকটাক চাঁদা তুললেও পুলিশের তরফ থেকে তাতে রয়েছে-মানা। তবে থেমে নেই-বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা পরিচয়ে বিভিন্ন কায়দায় ওই ফুটপাত চাঁদাবাজি সচলের তৎপরতা। আর তাতে পুলিশের অনীহা গুটাতে চলছে-দফায় দফায় তদবিরও। মোট কথায়-থেমে নেই, নয়া তকমায় তোলা বাজ চক্র উদিত হওয়ার পাঁয়তারা।

তৃতীয়ত শাহজাহানপুর-ফের জমজমাট হয়ে উঠেছে,সেই সমালোচিত লোমহর্ষক চাঁদার বাজার খিলগাঁও রেলগেট মাছ বাজার। রেললাইন ঘেঁষা বাজারটি এখন আরো বৃহদাকারে চলছে-হরদমে। শুধু বদলেছে নিয়ন্ত্রণ। তোলাবাজিতে রয়েছে-আগের সেই সিন্ডিকেট। বিগত সময়েও সিন্ডিকেট মফিজ স্থানীয় প্রভাবশালী ও পুলিশের ছত্রছায়া মাছ বাজারসহ খিলগাঁও বাজার ফুটপাতের চাঁদা আদায় করতেন। এখনো কৌশলে ভোল পাল্টে এলাকার নতুন প্রভাবশালীদের সাথে আঁতাত করে চালিয়ে যাচ্ছেন-তোলাবাজি। থানা পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে ও কৌশলে দোকানদারদের ম্যানেজ করে নীরবে চাঁদাবাজিতে রয়েছেন-বহাল। তবে সেখানে পুলিশের তৎপরতাও রীতিমতো নিষ্ফল বলেও জানা গেছে।   

চতুর্থত খিলগাঁও-এলাকার বহু পুরোনো ফুটপাত সর্দার বিল্লাল মোল্লা ওরফে মুরগী ওয়ালা মোল্লা ৫ আগস্টের পর সটকে পড়েছে। আর তাতে রেলগেট ও আশপাশের ফুটপাত চাঁদা বন্ধ প্রায়। তবে হালিম ওয়ালা বিল্লাল ও তার ছেলে ইদানীং কিছু টহলরত পুলিশের নামে টাকা তুলতে হকারদের বাধার মুখে পড়ছে। তবে স্থানীয় বিএনপি নেতা পরিচয়ে কতিপয় লোক আটোরিকশা,লেগুনা স্ট্যান্ড ও বাসাবো খাল পাড়ের গাড়ির গ্যারেজসহ ছোটখাট ব্যবসায় নীরবে চাঁদাবাজি করছে। আর তাতে ওসির আস্কারা রয়েছে-বলেও আছে অভিযোগ। সেই সাথে এলাকার নয়া ধান্ধাবাজেরা ওসির ছোটভাই ও কাছের লোক বলেও বেশ সাড়া জাগিয়েও তুলেছে। যা নিয়ে নিরীহ বাসিন্দাদের মধ্যে রীতিমতো এক ধরনের ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

পঞ্চমত সবুজবাগ-সবুজবাগ এলাকার কিছু কিছু ফুটপাত থেকে নয়া খোরদের ইন্ধনে বিভিন্ন খরচের নামে হকার শ্রেণীর কিছু লোক নতুনভাবে টুকটাক চাঁদা তুললেও তাতে পুলিশের তরফ থেকে রয়েছে-অসম্মতি। তবে থেমে নেই-নয়া সিন্ডিকেট বিভিন্ন কায়দায় ওই ফুটপাত চাঁদাবাজি সচল করার তৎপরতাসহ দফায় দফায় তদবির। তবে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় নতুন কায়দায় নানা অজুহাতে নতুন সিন্ডিকেট ‘লবণ চাকরিতে’ শুরু করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

৬ষ্ঠত মুগদা-মুগদা থানা এলাকার বরাবরের চেয়ে ওই ফুটপাত বাণিজ্য বেশি জমেছে। আগের ফুটপাত বাজারগুলো আরো আয়তনে বেড়েছে। যদিও তাতে পুলিশে ও সরব কোন আনাগোনা নাই বললেই চলে। তবুও চলছে-সুযোগ বুঝে নানা কৌশলে পুলিশের নামেই তোলা আদায়। ছোট পরিবহনে তা হয়ে গেছে-গতানুগতিক। তবে এতে কড়া বাধার কথা সমেত পুলিশের এসবের সাথ কোন ধরনের সংশ্লিষ্টতা নাই বলে এসব থানা থেকে সাফ জানানো হয়। আর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়,এ ব্যাপারে কড়াকড়ি। মানে-জড়ালেই ব্যবস্থা। সেই যাই হোক,আসল ব্যাপারটি হলো-বেশীর এলাকার এ চাঁদার বাণিজ্য’র চললে নীরব প্রস্তুতি। আর যে সব জায়গায় এ চাঁদার বাণিজ্য চলছে-তার হাল হকিত অনুসরণ-অনুকরণ।

 

আমার বার্তা/এমই