হঠাৎ এনবিআরে সরব দুদক

নতুন করে আরও পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৫, ১০:৩০ | অনলাইন সংস্করণ

  অভিজিত বনিক

এনবিআরের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন । এর আগে এমনটা দেখা যায়নি। প্রথম দফায় পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতির তদন্ত করলেও আবারও নতুন করে আরও পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দুদক। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও সদস্যের বিরুদ্ধে কর আদায়ে ঘুষ গ্রহণ, কর ফাঁকির সুযোগ দেয়া এবং হয়রানির অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে, তারা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য লুৎফুল আজীম, ভ্যাটের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) অতিরিক্ত কমিশনার আবদুর রশীদ মিয়া, কর গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, কর অঞ্চল ১৬ এর উপকর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম ও এনবিআরের যুগ্ম কমিশনার তারেক হাসান।

দুদক জানায়, এই কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে কর ও শুল্ক ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দুদক সূত্র জানায়, তথ্য-উপাত্ত ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে কিছু করদাতাকে কর ফাঁকির সুযোগ করে দিচ্ছেন। আবার নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে ইচ্ছাকৃতভাবে কর কমিয়ে দেয়াতে করদাতা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উভয়ে লাভবান হন। এর ফলে সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, কিছু কর্মকর্তা ঘুষ না পেলে কর ফাঁকির মিথ্যা মামলা দিয়ে করদাতা ও প্রতিষ্ঠানের মালিকদের হয়রানি করেন। কর ফেরতের ক্ষেত্রেও অনিয়ম চলছে দীর্ঘদিন ধরে। করদাতারা আগাম কর দেয়ার পর কিংবা বেশি কর পরিশোধের পর নিয়ম অনুযায়ী তা ফেরত পাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা ফেরত পেতে গেলে অনেক সময় অতিরিক্ত করের অর্ধেক পরিমাণ ঘুষ দিতে হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাই এসব টাকা নিজেদের পকেটে ভরছেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ঘুষের বিনিময়ে কর ফাঁকির সুযোগ করে দেয়া ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এনবিআরের ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। এই ছয়জনের মধ্যে অন্তত পাঁচজন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বলে জানা গেছে। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ঐক্য পরিষদের সভাপতি।

দুদকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এনবিআরের কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর আদায়ের ক্ষেত্রে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।

আমার বার্তা/জেএইচ