যে দুই কারণে এবারের বিপিএলকে সফল বলছেন ফাহিম
প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:০০ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

সদ্য সমাপ্ত বিপিএল শুরুর আগে ভিন্ন কিছু উপহার দেওয়ার আশ্বাস ছিল। ক্রীড়া উপদেষ্টা থেকে শুরু করে বিসিবির নতুন কমিটির তরফে বারবার ভিন্ন আঙ্গিকের বিপিএলের কথা শোনা যাচ্ছিল। মাঠের বাইরের এসব বাণী ও প্রত্যাশার পারদ ভক্ত-সমর্থকদেরও নজর কেড়েছিল। তবে মাঠে রানের উত্তাপ থাকলেও কম বিশৃ্ঙ্খলাও হয়নি। ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বকেয়া, খেলা বর্জন কিংবা ফিক্সিংয়ের গুঞ্জনও উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মতে, অতীতের তুলনায় সদ্য শেষ হওয়া বিপিএল অনেক বেশি প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে। বিপিএলের সাফল্যের কারিগর হিসেবে টিকিট ব্যবস্থা এবং উইকেটকে তুলে ধরেছেন ফাহিম।
সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসের সঙ্গে কথোপকথনে ফাহিম বলেন, ‘এবারের টিকিট ব্যবস্থা ছিল সুশৃঙ্খল। অনলাইন টিকিট ব্যবস্থায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বেশিরভাগ টিকিটই সাধারণ মানুষ পাবে-অনলাইন টিকিট ব্যবস্থা এটা নিশ্চিত করেছে। যা আগেরবারের মতো নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণত বিপিএল সবসময়ই জনসাধারণকে আকর্ষণ করে। কিন্তু এবার অবিশ্বাস্য সাড়া ছিল, যা আমাদের জন্য সত্যিই সন্তুষ্টির। প্রতিটি ম্যাচেই স্টেডিয়াম জমজমাট ছিল। মাঠে প্রচুর দর্শক এসেছিল এবং নিজ নিজ দলকে সমর্থন করেছে। আপনি যদি ফাইনাল খেলা দেখেন, টিকিটের প্রচুর চাহিদা ছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা সেভাবে দিতে পারিনি। কারণ বিক্রির জন্য দেওয়ার সাথেই সাথেই টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।’
টিকিট ব্যবস্থা বিপ্লব ঘটিয়েছে অতীতের মত ঝামেলা ছাড়াই ভালোভাবে টিকিট ক্রয়ের সুযোগ পেয়েছে দর্শকরা। আরেক সাফল্য উইকেট। এবার স্পোর্টিং উইকেট প্রস্তুতের জন্য কিউরেটরদের কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছিল বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। এর ফলে বেশিরভাগই ম্যাচই হাই-স্কোরিং হয়েছে। ফাহিম জানান, পাওয়ার-হিটিং দক্ষতা বাড়াতে না পারার কারণ হিসেবে প্রায়ই উইকেটকে কাঠগড়ায় তোলে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা।
তিনি বলেন, ‘উইকেটকে দোষারোপ করা যে ঠিক ছিল, সেটি প্রমাণ করেছে তারা। এই বিপিএলে আমরা দেখেছি বাংলাদেশি ব্যাটাররা ভালো উইকেট পেলে বড় ছক্কা মারতে পারে। ব্যাটার ও বোলারদের জন্য ভালো উইকেট করার পরামর্শ ছিল। আমরা দেখেছি ব্যাটাররা রান উপভোগ করেছে, হাই-স্কোরিং উইকেটেও বোলাররা তাদের দক্ষতা দেখিয়েছে।’ আরও যোগ করেন, ‘বিশেষ করে, আমাদের স্থানীয় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ট। তারা নিজেদের সেরাটা দিয়েছে,এই ফরম্যাটের জন্য অপরিহার্য স্ট্রাইক রেট ধরে খেলেছে। সত্যিই খুব ভালো ছিল। আমি এই মুহূর্তে সব খেলোয়াড়ের নাম বলতে পারছি না তবে নাইম শেখ, পারভেজ হোসেন ইমন, তানজিদ হাসান তামিম, ইয়াসির আলী চৌধুরী, নুরুল হাসান সোহানের মতো প্রতিভাবান ক্রিকেটার পাওয়ার-হিটিং দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। যা সত্যিই ভালো ছিল।’
এবারের বিপিএলে আধিপত্য বিস্তার করেছে স্থানীয় খেলোয়াড়রা। বোলিং এবং ব্যাটিং তালিকায় শীর্ষে আছে তারা। এবারের আসরে সর্বোচ্চ ৫১১ রান সংগ্রাহক নাইম শেখ। শীর্ষ দশের মধ্যে স্থানীয় ব্যাটারই ছিলেন নয়জন। যা বিপিএলের ইতিহাসে প্রথম নজির। বোলিংয়ে সর্বোচ্চ ২৫ উইকেট নিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। বিপিএলের ইতিহাসে এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকার। শীর্ষ ১০ বোলারের মধ্যে, মাত্র তিনজন বিদেশী খেলোয়াড় আছেন। অবশ্য বিদেশি উল্লেখযোগ্য তেমন ক্রিকেটারও আসেননি সেভাবে।
ফাহিম মনে করেন, ‘সব মিলিয়ে বিপিএল ভালো হয়েছে এবং আমরা যা চেয়েছিলাম ঠিক তেমনই হয়েছে। আশা করি, যা অনিয়ম হয়েছে আমরা ঠিক করতে পারবো এবং ভবিষ্যতে মান বজায় রাখতে পারবো।’
আমার বার্তা/জেএইচ