শেষ লড়াইয়ে হেরে না ফেরার দেশে কিশোরী ফুটবলার সুস্মিতা
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪১ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

প্রাণবন্ত হাসি, খেলার মাঠে দৌড়ঝাঁপ আর চোখভরা স্বপ্ন। সবকিছুই থেমে গেলো মাত্র ১৬ বছরে। মেহেরপুর জেলা নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক ও মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী সুস্মিতা সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
পরিবারের দবি, প্রায় এক মাস আগে ভুলবশত অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় তার অসুস্থতা। যশোর ও ঢাকায় দীর্ঘ চিকিৎসা চললেও সুস্থ হয়ে মাঠে আর ফেরা হলো না তার।
চিকিৎসকদের মতে, ঘুমের ওষুধের প্রভাবে কিডনিতে জটিলতা তৈরি হয় তার। আর সেই জটিলতার সঙ্গেই শেষ লড়াইয়ে হেরে গেলেন এই কিশোরী ক্রীড়াবিদ।
মেহেরপুর সদর উপজেলার হরিরামপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের নাতনি সুস্মিতা। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর থেকে তিনি নানাবাড়িতেই বড় হচ্ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার ছিল অসাধারণ প্রতিভার ছাপ। বিশেষ করে ফুটবলে তার নেতৃত্বগুণ আর খেলায় দক্ষতা তাকে মেহেরপুর জেলা নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক হিসেবে পরিচিতি এনে দেয়। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাসে সবার চোখের মণি সুস্মিতা আজ আর নেই। হরিরামপুর গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের আবহ।
সুস্মিতা ছোটবেলা থেকেই প্রতিভাবান ছিলেন। মাত্র নয় বছর বয়সে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর তার জীবনে নেমে আসে নানা সংকট। এরপর থেকে তিনি নানাবাড়িতে থেকে লেখাপড়া ও খেলাধুলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অভাব-অনটন আর পারিবারিক সমস্যার মাঝেও দমে যাননি সুস্মিতা। দৃঢ় মনোবল ও অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে একদিকে যেমন নিয়মিত লেখাপড়া করেছেন, অন্যদিকে ফুটবলেও নিজেকে তৈরি করেছেন জেলার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে।
সুস্মিতার নানা আব্দুস সালাম জানান, ‘প্রায় এক মাস আগে ভুল করে ঘুমের ওষুধ খেয়েছিল সুস্মিতা। তারপর থেকে আশা করতাম ও ভালো হয়ে ফিরবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ফিরল না।’
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই মঙ্গলবার সকালে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
আমার বার্তা/জেএইচ