কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় গোমতি নদী ও সালদানদী বাঁধ ভাঙ্গা পরে গত ৩ দিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে আবারও আমন ধানের চারা ও রোপনকৃত জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এ বছর উপজেলায় আকস্মিক ভয়াবহ বন্যায় আরও একবার আমনের বীজতলাসহ অন্যান্য ক্ষেতখামার ডুবেছিল। ফলে কৃষকের দ্বিগুণ ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা বন্যার পানি কমে গেলে পুনরায় আমনের বীজতলা তৈরি করে এবং ক্ষেতে আমন ধানের চারা রোপন করে। কিন্তু এখন টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে আমন ধানের চারা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকের হাহাকার বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্বিগুন টাকা খরচ হওয়ার পরেও জমিতে চারা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় কৃষকের এখন মাথায় হাত। এছাড়া অনেক কৃষক অধিক দাম দিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে আমনের চারা ক্রয় করে রোপণ করেছিল কিন্তু এখন সব পানির নিচে চলে যাওয়ায় দ্বিগুণ ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকেরা।
এ ব্যাপারে উপজেলার ধান্যদৌল গ্রামের কৃষক জামাল মিয়া জানান, গত বন্যার আগে ৬০ শতক জমি রোপনের জন্য বীজতলা তৈরি করেছিলাম।
বন্যার পানিতে ডুবে সব পঁচে যায়। এখন আবার ধান কিনে বীজতলা তৈরি করে ৬০ শতক জমি রোপন করেছিলাম এখন বৃষ্টিতে সব তলিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না কমলে এবছর আমন ধানে দ্বিগুণ ক্ষতি হবে আমাদের।
নাইঘর গ্রামের কৃষক এনায়েত মিয়া বলেন, আমি বন্যার পূর্বে ৩০ শতক জমিতে আমনের চারা রোপন করেছিলাম। বন্যার পানিতে চারা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আবার সাহেবাবাদ বাজার থেকে ২০০০ টাকার চারা কিনে এনে রোপন করেছি কিন্তু এখন বৃষ্টির পানিতে সব তলিয়ে যাচ্ছে। যদি আবার বন্যা দেখা দেয় তাহলে আমার সব টাকা জলে মিশে যাবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর রোপা আমন মৌসুমে বীজতলা তৈরির সময় আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। ফলে এ বছর যথাসময়ে বীজতলা তৈরি করতে পারেনি অনেক কৃষক। এর পর শুরু হয় ব্রাহ্মণপাড়ায় আকস্মিক বন্যা যার ফলে বীজতলা পানিতে তলিয়ে গিয়ে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়।
চলতি মৌসুমে আমনের বীজ তলার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬৬ হেক্টর, অর্জিত হয়েছিল ২০৫ হেক্টর।কিন্তু ভয়াবহ বন্যার কারণে অর্জিত বীজতলা নষ্ট হয়ে যায় বলে জানায় কৃষি বিভাগ।এ উপজেলায় ৫ হাজার ৪২৯ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবার বন্যা ও অধিক বৃষ্টি হলে লক্ষমাত্রা অর্জনে শঙ্কা রয়েছে।