
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে স্বামীর সহায়তায় এক গৃহবধূকে (২০) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে তার স্বামীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে ওই গৃহবধূ গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এর আগে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশ্বানি এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ভুক্তভোগীর স্বামী নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানার রামহরিতালুক গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রাজু আহমেদ (২৬), একই গ্রামের মৃত সিরাজ মাঝির ছেলে বেলাল হোসেন (৩৫), আবুল কাশেমের ছেলে হৃদয় (২৫), চাঁন মিয়া মাঝির ছেলে মহিন উদ্দিন (২৬), একই থানার মুন্সীতালুক গ্রামের শাহ আলমের ছেলে আবুল কালাম (৪৫)। শনিবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ওই নারীর স্বামী রাজু আহমেদ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশ্বানী এলাকার ইসলামিয়া ব্রিক ফিল্ডের শ্রমিক। ২০২৩ সালে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে রাজু আহমেদ নেশাগ্রস্ত হওয়ায় তাদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। এ কারণে ওই নারী তার বাবার বাড়ি নোয়াখালী চলে যান। চলতি মাসের প্রথম দিকে উভয় পরিবারের উপস্থিতিতে বিষয়টির সমঝোতা হয় এবং রাজু তার স্ত্রীকে পুনরায় তার বাড়ি নিয়ে যান।
গত ১৫ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে থাকার কথা বলে রাজু তার স্ত্রীকে কৌশলে মিরশ্বানী এলাকায় ইসলামিয়া ব্রিক ফিল্ডে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর ব্রিক ফিল্ডের শ্রমিক বেলাল হোসেন ওই ব্রিকফিল্ডের শ্রমিকদের একটি ঘরে তাদের (স্বামী-স্ত্রী) থাকার ব্যবস্থা করে দেন।
পরে ১৬ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে শ্রমিক বেলাল হোসেন ও আবুল কালাম ঘরে প্রবেশ করে ওই নারীর স্বামীর সঙ্গে কিছুক্ষণ আলাপের পর আবুল কালাম বাইরে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর রাজুর সহায়তায় বেলাল হোসেন ওই নারীকে ধর্ষণ করে। গ্রেপ্তারকৃতরা ওই নারীকে ব্রিকফিল্ডের ওই ঘরে জিম্মি করে রাখে।
পরে ১৮ অক্টোবর রাতে ব্রিকফিল্ডের শ্রমিক হৃদয় ও মহিন উদ্দিন ঘরে প্রবেশ করে ওই নারীকে তার স্বামীর সহায়তায় পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ২০ অক্টোবর রাতে একই কায়দায় শ্রমিক হৃদয় তাকে আবারও ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় তার স্বামী এ ঘটনা কাউকে না জানানোর হুমকি দেয় এবং মারধর করে। পরে ওই ব্রিক ফিল্ডে কর্মরত অন্যান্য শ্রমিকরা বিষয়টি জানতে পেরে ওই নারীর বাবাকে জানায়। গত বৃহস্পতিবার স্থানীয়দের সহায়তায় ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হিলাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শুক্রবার ওই নারীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে রাতভর অভিযান পরিচালনা করে ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার দুপুরে মামলা রেকর্ডের পর বিকেলে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে।

