দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হলে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি—এমন মন্তব্য করে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিনিয়োগের পথে যেসব অন্তরায় রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ে তা দূর করার জন্য সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, বিনিয়োগকারীদের দ্রুত ও সহজে সেবা দিতে বর্তমানে ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) পোর্টালের মাধ্যমে ৪৩টি সংস্থার ১৩৪টি সেবা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যবসা সহজীকরণের অংশ হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতায় চালু করা হয়েছে ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো’ (বিএসডাব্লিউ)’। এর মাধ্যমে একটি প্ল্যাটফর্মে আবেদন, প্রক্রিয়াকরণ ও সেবা গ্রহণ করা যাচ্ছে।
বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি জানান, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একটি ‘ইনভেস্টমেন্ট পাইপলাইন’ তৈরি করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে প্রতিশ্রুত বিনিয়োগগুলোকে কার্যকর বিনিয়োগে পরিণত করার প্রক্রিয়া সহজ হবে।
এছাড়া সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) পদ্ধতিতে সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগ বাস্তবায়নের উদ্যোগ আরও জোরদার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এ লক্ষ্যে আগামী অর্থবছরে পিপিপি তহবিলে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই ও প্রতিযোগিতামূলক করতে হলে বেসরকারি খাতকে সামনে রেখে কাঠামোগত সংস্কার এবং বিনিয়োগ সহায়ক নীতিনির্ধারণ অপরিহার্য।’
বলে রাখা প্রয়োজন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা— যা চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম।
প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং এডিপি ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি বর্তমান সরকারের দৃষ্টিতে সংকোচনমূলক বাজেট।
এর আগে সোমবার (২ জুন) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার দফতরে অনুষ্ঠিত হয় উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠক। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন শেষে তাতে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর বাজেট ডকুমেন্টস নিয়ে রামপুরার বিটিভি ভবনে যান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। সেখানে রেকর্ড করা হয় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপনা। যা বিকাল ৩টায় সম্প্রচার শুরু করে বাংলাদেশ টেলিভিশন।
আমার বার্তা/এল/এমই